মর্মান্তিক: খুঁটি থেকে নামানো হচ্ছে মানিকবাবুর দেহ। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যুতের কাজ করার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল বিদ্যুৎ দফতরের এক ঠিকা কর্মীর। শনিবার সকাল পৌনে ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ছত্রি গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়নিহারি গ্রামে। মৃতের নাম মানিক বেরা (৪৭)। তাঁর বাড়ি বালিঘাই নয়াপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে বড়নিহারি গ্রামের গোরাচাঁদ গারু নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বালিঘাই বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা নতুন মিটার বসিয়ে যান। সেই মিটারের লাইন সংযোগের জন্য বালিঘাই বিদ্যুৎ অফিসের দুই ঠিকা কর্মী এদিন কাজ করতে আসেন। গ্রামের দুই প্রান্তে দু’টি ট্রান্সফর্মার রয়েছে। অভিযোগ, মানিক বেরা এবং তাঁর আর এক সহকর্মী গ্রামের পশ্চিম দিকের থাকা ২৫ কেভি ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করলেও গ্রামের অন্য প্রান্তের ১১০ কেভি ট্রান্সফর্মারের সংযোগ ছিন্ন করেনি। যে বাড়ির সামনে ওই নতুন মিটারের সংযোগের খুঁটি রয়েছে, সেখানে ১১০ কেভি ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, মানিকবাবুদের কাজের সময় লোডশেডিং চলছিল। তখন তিনি মই লাগিয়ে ওই খুঁটিতে ওঠেন এবং বাড়িওলার কাছ থেকে কাটারি নিয়ে তারের উপরে থাকা বাঁশের কঞ্চি কাটতে শুরু করেন। হঠাৎ লোডশেডিং শেষ হয়ে বিদ্যুৎ ফিরে আসে। তখনই বিদ্যুৎপৃষ্ট হন মানিকবাবু। তাঁর দেহ খুঁটির উপরেই ঝুলতে থাকে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা পার্বতী জানা বলে, ‘‘তারের উপর বাঁশ পড়ে যাওয়ার জন্য নতুন তার সংযোগে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই বাড়ির মালিককে বলে কাটারি আনিয়ে উনি বাঁশের কঞ্চি কাটছিলেন। হঠাৎ বিদ্যুৎপৃষ্ট হন তিনি। খুঁটির উপর ছটফট করতে করতে চোখের সামনে ওঁর মৃত্যু হল।’’ প্রায় ঘণ্টা দেড়েক খুঁটির উপর দেহটি ঝুলে থাকার পরে পুলিশ গিয়ে তা উদ্ধার করে।
ওই ঘটনায় কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা। মৃতের ভাই হিরালাল বেরা বলেন, ‘‘বালিঘাই বিদ্যুৎ অফিস থেকে দাদা কাজ করতে এসেছিল। এই ভাবে অসতর্ক ভাবে কখনও কাজ করেনি। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতে ওকে মরতে হল।’’
যদিও এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার শ্যামলকুমার হাজরা বলেন, ‘‘যিনি খুঁটিতে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন, তিনি বিদ্যুৎ দফতরের কোনও কর্মী নন। ঠিক কী কারণে তিনি মারা গিয়েছেন, তা তদন্ত করে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’