আত্মঘাতী এক যুবক। প্রতীকী চিত্র।
ঘুমন্ত স্ত্রীকে কাটারির কোপ মেরে আত্মহত্যা করলেন স্বামী। ঝাড়গ্রাম থানার গজাশিমূল গ্রামের ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতের নাম নির্মল দাস (৪২)। বুধবার সকালে গজাশিমূল গ্রামে বাড়ির কাছেই একটি কুল গাছে দড়ির ফাঁসে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের জিতুশোলের একটি কারখানার শ্রমিক নির্মলের মানসিক সমস্যা ছিল। বছর দশেক ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছে। তবে তিনি নিয়মিত ওষুধ খেতেন না। মাঝে মধ্যেই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করতেন। গত দিন দশেক কারখানার কাজেও যাননি। মঙ্গলবার রাতে ভাত খেয়ে ঘরে পায়চারি করছিলেন তিনি। স্ত্রী নীলিমা ঘুমোতে বলায় তাঁর সঙ্গে বচসা শুরু হয়। তারপরে স্ত্রী ঘুমিয়ে যান। এরপরে বুধবার ভোরে তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন পাড়া-পড়শিরা। অভিযোগ, ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীর উপর কাটারি নিয়ে চড়াও হন নির্মল। কাটারির কোপে নীলিমার থুঁতনি ও গালের খানিকটা অংশ কেটে গিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। এরপরে পালিয়ে যান নির্মল। তার কিছুপরেই তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
মৃতের খুড়তুতো দাদা মতিলাল দাস বলেন, ‘‘নির্মলের মানসিক সমস্যা বহুদিনের। বছর দশেক আগে ওঁর নিজের দাদা পরিমল গুজরাতে চিকিৎসক দেখিয়েছিল। পরিমল গুজরাতে থাকে। কিন্তু নির্মল ঠিকমত ওষুধ খেত না। মাঝে মধ্যেই উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করত। দিন দশেক ও কাজেও যায়নি। বুধবার ভোরে নীলিমার চিৎকারে ছুটে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত কাণ্ড। এরমধ্যে নির্মল কোথায় রয়েছে সেই খোঁজ নেওয়া হয়নি। পরে কুলগাছে ঝুলন্ত অবস্থায় দেহ পাওয়া যায়।’’ তাঁর অনুমান, কাটারির কোপে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে এমন আশঙ্কাতেই আত্মহত্যা করেছে নির্মল।
পুলিশেরও অনুমান, ‘‘ঘটনা ঘটিয়ে আতঙ্কিত নির্মল আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর স্কুল পড়ুয়া এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। খবর পেয়ে তাঁর দাদা গুজরাত থেকে আসছেন। যদিও এই নিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি।’’ পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে।