প্রশ্ন দলের অন্দরে

মমতার প্রচারে বাদ জোটের গড়

ভোট-প্রচারে পশ্চিম মেদিনপুরে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার দিনে সভা-মিছিল মিলিয়ে দশটি কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। কিন্তু যে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই তৃণমূলকে ভাবনায় রেখেছে, সেই নারায়ণগড় আর সবংয়েই প্রচারে যাচ্ছেন না মমতা !

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৬ ০১:৫৮
Share:

ভোট-প্রচারে পশ্চিম মেদিনপুরে আসছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চার দিনে সভা-মিছিল মিলিয়ে দশটি কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। কিন্তু যে দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই তৃণমূলকে ভাবনায় রেখেছে, সেই নারায়ণগড় আর সবংয়েই প্রচারে যাচ্ছেন না মমতা !

Advertisement

বাম-কংগ্রেসের বোঝাপড়া হওয়ায় জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের এই দু’টি কেন্দ্রে তৃণমূলের সামনে কঠিন লড়াই। কারণ, নারায়ণগড়ে প্রার্থী সিপিএমের জেলা সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র আর সবংয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়া। ২০১১ সালে পরিবর্তনের ঝড়েও জিতেছিলেন সূর্যবাবু। আর সবং তো মানসবাবুর খাসতালুক। সিপিএম ও কংগ্রেসের এই দুই শীর্ষ নেতাই এ বার জোটের জোরে লড়ছেন। প্রচারেও দু’জনে বুঝিয়ে দিয়েছেন, হাত-হাতুড়ির শক্তিতেই ঘাসফুলকে রোখার সব রকম চেষ্টা হবে।

তা সত্ত্বেও নারায়ণগড় ও সবং কেন তৃণমূল নেত্রীর প্রচার কর্মসূচিতে নেই? এ নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই রয়েছে নানা মত। কারও মতে, মুখ্যমন্ত্রী আগে দু’টি বিধানসভা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। যদি পরিস্থিতি দলের অনুকূলে বোঝে তবেই সভা করবেন। কারণ, মমতার প্রচারের পরেও যদি নারায়ণগড় বা সবংয়ে তৃণমূল প্রার্থী হেরে যান, তাহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে। আর এক পক্ষের আবার মত, দু’টি আসনে কোনও ব্লক নেতাকে প্রার্থী করেননি তিনি। দুই জেলা কার্যকরী সভাপতিকে প্রার্থী হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, এলাকায় ক্ষোভ রয়েছে।

Advertisement

যদিও এই দুই কেন্দ্রে মমতার প্রচারে না আসা নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতারা কেউ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তবে নারায়ণগড়ের তৃণমূল প্রার্থী প্রদ্যোৎ ঘোষের দাবি, “রাজ্য জুড়ে নির্বাচন চলছে তো। সব জায়গার তো নেত্রীর পক্ষে পৌঁছনো সম্ভব নয়। তবে আমার আশা, দিদি নিশ্চয় আমার কেন্দ্রেও জনসভা করবেন। প্রথম তালিকায় হয়তো নাম নেই। হয়তো পরে জানাবেন।” আর সবংয়ের প্রার্থী নির্মল ঘোষের কথায়, ‘‘রাজ্য জুড়ে নির্বাচন। উনি তো ভীষণ ব্যস্ত। সময় করতে পারলে নিশ্চয় আসবেন। দিদির আশীর্বাদ তো সঙ্গে থাকছেই।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, আপাতত স্থির হয়েছে ২৫-২৬ এবং ৩০-৩১ মার্চ, মোট চারদিনে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১০টি কর্মসূচি করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে যে তালিকা এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, আজ, শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর তিনটি কর্মসূচি করবেন— ঝাড়গ্রাম, শালবনি ও মেদিনীপুর কেন্দ্রে। কাল, শনিবার বিনপুর, নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুরে প্রচার সারবেন। ৩০ মার্চ তাঁর জনসভা করার কথা খড়্গপুর শহরে। আর ৩১ মার্চ মমতার সভা হবে দাঁতন, কেশিয়াড়ি ও খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায়।

বিরোধীরা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রচার সূচি নিয়ে কিছু বলতে নারাজ। সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায় ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে কোনও জায়গায় প্রচার করতেই পারেন, আবার নাও পারেন। উনি সবং বা নারায়ণগড়ে প্রচারে যান অথবা না যান, তাতে আমাদের কিছু বলার নেই।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়ারও বক্তব্য, “অন্য দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না। তবে আমাদের আশা, সবং ও নারায়ণগড়ের মানুষ আমাদের পক্ষেই রায় দেবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement