জমি জটে শিকেয় শালবনির রেডিও প্রকল্প 

 ক’দিন আগেই বেসরকারি উদ্যোগে ঝাড়গ্রামে চালু হয়েছে এফএম রেডিও স্টেশন। বেতারে সম্প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান জনপ্রিয়ও হয়েছে। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি অবশ্য আপাতত বেতার বিনোদনে বঞ্চিতই থাকছে। আর তার মূলে জমি-জট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:২০
Share:

ক’দিন আগেই বেসরকারি উদ্যোগে ঝাড়গ্রামে চালু হয়েছে এফএম রেডিও স্টেশন। বেতারে সম্প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান জনপ্রিয়ও হয়েছে। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি অবশ্য আপাতত বেতার বিনোদনে বঞ্চিতই থাকছে। আর তার মূলে জমি-জট।

Advertisement

জমি পাওয়া যায়নি বলে শালবনিতে প্রস্তাবিত কমিউনিটি রেডিও সেন্টার আপাতত হচ্ছে না। এই প্রকল্পের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিলেন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। প্রকল্প রূপায়ণে তিনি তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে ৩০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করেছিলেন। তবে জমি না মেলায় জেলা প্রশাসনের কাছে বিকল্প প্রকল্প জমা দিয়েছেন বিধায়ক। শ্রীকান্ত বলেন, “জমির একটা সমস্যা রয়েছে। তাই রেডিও সেন্টার এখন হচ্ছে না।’’

কমিউনিটি রেডিও-র জনপ্রিয়তা ক্রমে বাড়ছে। সাধারণত, যাঁরা শ্রোতা তাঁরাই এখানে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। পরিবেশিত হয় সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, যা সহজেই এলাকাবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে।

Advertisement

এফএম ব্যান্ডে অনুষ্ঠান প্রচারিত হওয়ায় শ্রবণমানও উন্নতমানের হয়। রাজ্যে প্রথম কমিউনিটি রেডিও সেন্টার চালু হয়েছিল ২০০৮ সালে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সম্প্রতি শালবনিতে এমন রেডিও প্রকল্পের প্রস্তুতি শুরু হওয়ায় এলাকাবাসী খুশি হয়েছিলেন। কারণ, এমন রেডিও থাকলে আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে বাজারের দরদাম, এমনকী পড়ুয়ারা নানা পাঠ্যবিষয়ের খুঁটিনাটি সহজেই জানতে পারে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও বলছিলেন, “রেডিও সেন্টার চালু হলে চাষি মাঠে কাজ করতে করতে নানা খবরাখবর পেয়ে যেতেন। চিকিৎসা, জীবিকা, আইনি পরামর্শও মিলত। আর কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নানা জনস্বার্থমূলক সচেতনতা প্রচার
হত রেডিওতে।

জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, প্রথমে খাদিবাঁধে এই প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। পরে মহাশোলে প্রকল্প হবে বলে ঠিক হয়।

মহাশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এফএম স্টেশন গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রাথমিক সম্মতিও মেলে। ঠিক ছিল, মন্ত্রকের অধীন ‘ব্রডকাস্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্টস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ (বেসিল) স্কুল চত্বরে ট্রান্সমিটার বসাবে এবং স্টুডিওর পরিকাঠামো তৈরি করে দেবে। ঠিক ছিল, প্রস্তাবিত রেডিও স্টেশন থেকে ৪০ কিলোমিটার পরিধি পর্যন্ত এলাকায় অনুষ্ঠান শোনা যাবে। রেডিও স্টেশনের নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকবে। ফলে, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তের শ্রোতারা এই গ্রামীণ রেডিও স্টেশনের অনুষ্ঠান শুনতে পাবেন।

কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় অন্যত্র। দেখা যায়, যে জমিতে এই প্রকল্প গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়েছে, সেই জমিটি মহাশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামে নেই। ফলে, আর এগোনো সম্ভব হয়নি। কমিউনিটি রেডিও সেন্টার হচ্ছে না জেনে শালবনির মানুষ হতাশ। এলাকার চাষি অজয় মাহাতো, বংশী মাহাতোরা বলছিলেন, “রেডিও সেন্টার হলে ভালই হত। কবে ভারী বৃষ্টি হবে, কবে চড়া রোদ উঠবে, আগে থেকে জানা যেত।’’

বিধায়ক শ্রীকান্তের অবশ্য আশ্বাস, “শালবনিতে কমিউনিটি রেডিও সেন্টার করার চেষ্টা থাকবেই।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তাও বলেন, “এখন হচ্ছে না ঠিকই। তবে জমির কাগজপত্র ঠিক করে পরবর্তী সময় ওখানে এই প্রকল্প করা যেতে পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement