পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল বিরোধী বিজেপি ও কংগ্রেস। কিন্তু সেই দাবি টেকেনি। আর তাতেই তমলুক লোকসভার হলদিয়া এবং নন্দীগ্রাম এই দুই বিধানসভায় লিড বাড়বে বলে আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল। আর সেই আত্মবিশ্বাস এতটাই যে, এই দুই বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই ভোটের লিড লক্ষাধিক হবে বলে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি।
সপ্তম তথা শেষ দফার লোকসভা ভোট আগামী ১৯ মে। তার আগেই তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের বিধানসভা ভিত্তিক ভোটের হিসেবের রিপোর্ট তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছেছে। দলীয় সূত্রে খবর, রিপোর্টে স্থানীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে, নন্দীগ্রাম থেকে ৯০ হাজার এবং হলদিয়া থেকে ৮০ হাজার ভোটের লিড পেতে পারেন তৃণমূল প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী। ভোটের ফল ঘোষণার আগে বিধানসভা ভিত্তিক ফলের এমন আগাম রিপোর্ট তৃণমূল শিবিরকে অনেকটাই স্বস্তি দেবে বলে মনে করছে। রাজনৈতিক মহল। কেননা, তমলুক লোকসভা কেন্দ্র নিয়ে এবার আত্মবিশ্বাসী বিজেপি এবং সিপিএম। সাতটি বিধানসভার মধ্যে তিনটিই বামফ্রন্টের দখলে। তাই তারা যেমন আশার আলো দেখছে, তেমনই গত পঞ্চায়েত ভোট থেকে রাজ্যজুড়ে বিজেপির পালে তুমুল হাওয়ায় আশা দেখছে বিজেপিও। ময়না, তমলুক, কোলাঘাট (পূর্ব), নন্দকুমার এবং মহিষাদল বিধানসভা নিয়ে শাসক দল, বিজেপি ও বামেরা গোড়া থেকে ভাল ফলের আশা করছে। এই অবস্থায় এ বার লোকসভা ভোটের ফলে হলদিয়া এবং নন্দীগ্রাম বিধানসভা যে বড় ফ্যাক্টর হতে চলেছে তা টের পাছে সব রাজনৈতিক দলই।
লোকসভা ভোটের দিন নন্দীগ্রাম এবং হলদিয়া বিধানসভায় শাসক দলের বিরুদ্ধে একতরফা ভোটের অভিযোগকে মান্যতা দেয়নি নির্বাচন কমিশন। তৃণমূল সূত্রে খবর, নন্দীগ্রাম বিধানসভার মধ্যে মোট ২৭৮ টি বুথে ভোট হয়। ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৩২ জন ভোটারের মধ্যে দু লক্ষের অধিক ভোট পড়েছে। ২০১৪ সালে এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের লিড ছিল ৮৪ হাজার। ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে ৮৩ হাজার। ২০১৬-তে তমলুক লোকসভার উপ-নির্বাচনে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে প্রায় এক লক্ষ ৪০ হাজার ভোটের লিড ছিল। পর পর নির্বাচনে এমন ফলের নিরিখেই এবার ব্যবধান বাড়বে বলে আশাবাদী ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
অন্যদিকে, হলদিয়া বিধানসভা থেকেও লিডের বড় ব্যবধান আশা করছে শাসক দল, যা ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ পর্যন্ত হতে পারে বলে তাদের দাবি। হলদিয়া বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মধুরিমা মণ্ডলের বক্তব্য, বুথ ভিত্তিক সাংগঠনিক ভাবে ভোট প্রাপ্তির যে হিসেব এসেছে তার নিরিখে অন্যবারের তুলনায় এবার বেশি ব্যবধানে মার্জিন পাবে আমাদের প্রার্থী। জেলা নেতৃত্বকে আমরা তেমনই রিপোর্ট দিয়েছি।’’ একই সুরে নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা মেঘনাদ পালের দাবি, ‘‘তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে আমরাই প্রার্থীকে সবচেয়ে বেশি লিড দেব। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেলা নেতৃত্বকে দিয়েছি।’’
শাসকের এমন দাবিকে অবশ্য কটাক্ষ করতে দেরি করেনি বিরোধীরা। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মানস কুমার রায় বলেন, ‘‘হলদিয়া এবং নন্দীগ্রামে কী ভাবে ভোট হয়েছে তা মানুষ দেখেছে। তারা তৃণমূলকে মেনে নেবে না।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্যামল মাইতি বলেন, ‘‘হলদিয়া ও নন্দীগ্রামে পরিকল্পনা করে ভোট করিয়েছে শাসক দল। আমরা নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েছি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে কী করণীয় তা চূড়ান্ত করা হবে।’’