পাশাপাশি: রাজ্য সভাপতির সঙ্গে জেলা সভাপতি। নিজস্ব চিত্র
নেতা-কর্মীদের আচরণে যে কোথাও কোথাও কিছু মানুষ তাদের বিরোধী হয়েছেন তা স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী!
বুধবার ডেবরা অডিটোরিয়াম সংলগ্ন ময়দানে নির্বাচনী কর্মিসভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেই সভাতেই উপস্থিত ছিলেন সুব্রত। সেখানে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “রাজনৈতিকভাবে আমাদের কোনও বিরোধী নেই। কোথাও-কোথাও মানুষ কিছুটা বিরোধী হয়েছেন।” অবশ্য এর পিছনে কারণ দলের কর্মীদের একাংশের আচরণ তা স্পষ্ট করেছেন তিনি। মানুষ বিরোধী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি বলেন, “এটা আমাদের আচার আচরণের জন্য। আর কিছু মানুষ আমাদের মধ্যে রয়েছে যাঁরা পানের দোকানে চায়ের দোকানে বসে বলেন ওই জায়গাটা নরম, ওই জায়গাটা শক্ত। দলকে সুস্থ সবল করতে না পারলে ডাক্তারি করবেন না। নিজের কাজ করুন।”
এ দিন সভা শুরুর কথা ছিল দুপুর ১টায়। তৃণমূলের জেলা ও ব্লকের নেতৃত্বরা অনেক আগেই চলে এসেছিলেন সভামঞ্চের সামনে। সুব্রত পৌঁছন দুপুর ১টা ৫মিনিটে। তখনও অবশ্য সভাস্থল বেশ কিছুটা ফাঁকা ছিল। সুব্রত মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার প্রায় পনেরো মিনিট পর সভার কাজ শুরু হয়। দলের জেলা নেতৃত্বের ধমকের মুখে পড়ে তৃণমূলের ব্লক নেতারা ডেকে-ডেকে লোক আনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। একসময়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মঞ্চে মাইক নিয়ে বলেন, “আসলে সন্ধ্যায় আমাদের রাজ্য সভাপতির খুব জরুরি কাজ থাকায় উনি নির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগে এসেছেন। তাই এখনও সভাস্থলে অনেকে পৌঁছতে পারেনি।” পরে অবশ্য কোনওমতে মাঠ ভরলে সভার কাজ শুরু হয়।
কেন ঘটল এমন ঘটনা? তৃণমূলের ওই ব্লকের এক নেতার কথায়, “আসলে আমাদের দু’টি গোষ্ঠীর জন্য এমনটা হয়েছে। দু’পক্ষই ভেবেছে একে অপরকে খাটো করতে কর্মীদের নিয়ে আসবে না। এখন ফলটা টের পেয়েছে!” অবশ্য এমন মতানৈক্যের কথা অজানা নয় তৃণমূলের রাজ্য সভাপতিরও। তাই তিনি এ দিন বলেন, “কোথাও কোথাও মতে তফাত থাকে। নির্বাচনের প্রাক্কালে আমাকে কে ডেকে না ডেকেছে সেটা বড় কথা নয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতীককে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি কতটা সম্মানিত হলাম সেটা বড় নয়, দলকে সম্মানিত করা বড় বিষয়।”
এমন পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী কাজ পরিচালনার বার্তা দিয়েছেন সুব্রত। তাঁর কথায়, “নির্বাচন নানা বিধি-নিষেধে পালিত হয়। এমন কিছু করবেন না যাতে নির্বাচন যাঁরা পরিচালনা করছে তাঁদের কাজে বিঘ্ন ঘটে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে কাজ করবেন।”