সরাসরি চিঠি লিখুন মোদীকে। আর্জি জানাচ্ছে বিজেপি।
গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, জেলায় জেলায় খালি চিঠি পৌঁছে গিয়েছে। সেই চিঠি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। কর্মসূচির নাম ‘ভারত কে মন কি বাত’। চিঠির একদিকে রয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ছবি। পাশে তাঁর ঠিকানা। ‘ভাজপা কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ৬ এ দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গ, নিউদিল্লি, পিন ১১০০০২’। নীচে লেখা, ‘কাজ করে যে, প্রত্যাশা তারই কাছে’। অন্যদিকের বেশিরভাগ অংশই ফাঁকা। যেখানে সাধারণ মানুষ তাঁদের মনের কথা লিখবেন। উপরে লেখা, ‘আপনার পরামর্শ। কলম ওঠান আর সোজা মোদীজিকে জানান আপনার মনের কথা।’ যিনি চিঠি লিখছেন, তাঁর নাম, মোবাইল নম্বর, পিন কোড লেখার জায়গাও রয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৪০ হাজার এমন ফাঁকা চিঠি এসেছে বলে বিজেপি সূত্রে খবর। চিঠি ভরার জন্য বাক্সও এসেছে। প্রতিটি বিধানসভা ক্ষেত্রের জন্য একটি বাক্স। এই বাক্স পরে পৌঁছে যাবে দিল্লিতে, বিজেপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। চিঠি নিয়ে এখনও সরগরম রাজ্য- রাজনীতি। চিঠি বিলি ঘিরেই ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে কেন্দ্র- রাজ্য দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। ওই প্রকল্প থেকে সরে আসার কথা ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পে উপভোক্তাদের বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি সম্বলিত ‘এনটাইটেলমেন্ট লেটার’ পৌঁছতে শুরু করেছিল। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
চিঠির পাল্টা চিঠিই! রাজ্যেও চিঠি বিলি শুরু হয়। ওই চিঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্য সরকার কোন উপভোক্তাকে কোন প্রকল্পে কী সুবিধে দিয়েছে, তা মনে করিয়ে দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি। শুরুতে নবান্নে জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যসচিব এই কর্মসূচির কথা জানিয়েছিলেন। সেই মতো কাজও শুরু হয় জেলায় জেলায়। বিভিন্ন দফতরে সেই চিঠির বয়ান মেল করে পাঠায় নবান্ন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়।
বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘এটা আমাদের দলীয় কর্মসূচি। মানুষ মোদীজির কাছে আর কী প্রত্যাশা করেন, সেটা জানাই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।’’ দলের এক সূত্রে খবর, চিঠি বক্তব্য খতিয়ে দেখেই বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরি হবে। সেখানে গুরুত্ব পাবে সাধারণ মানুষের মতামত, পরামর্শ। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির প্রধানমন্ত্রী তো আসলে প্রচারমন্ত্রী। প্রচার ছাড়া ওদের (বিজেপির) সবটাই ফাঁকা!’’ শমিতের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের চিঠি বিলি আসলে সরকারি টাকায় ভোটের প্রচার। মুখ্যমন্ত্রী আর নিজের দলের প্রচারকদের উপরে ভরসা করতে পারছেন না বলেই এ ভাবে প্রকল্পের উপভোক্তাদের কাছে চিঠি পৌঁছচ্ছেন!’’ বিজেপির এক জেলা নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘জেলায় যে ৪০ হাজার খালি চিঠি এসেছিল, তারমধ্যে ৩৩ হাজার চিঠি ইতিমধ্যে বিলি হয়ে গিয়েছে।’’