মধ্যমণি: েদব ও অপরূপা পোদ্দারের সমর্থনে পদযাত্রায় মমতা। চন্দ্রকোনায়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
রাতভর ফণী নিয়ে উদ্বেগে কেটেছে। তবে খড়্গপুর হয়ে রাজ্যে ঢুকলেও বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি করেনি এই ঘূর্ণিঝড়। শনিবার সকালে আবহাওয়া ছিল ভালই।
সকাল সকালই খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে ঝুপড়ি চা দোকান খুলেছিলেন আবু বক্কর। বেলা ১১টা নাগাদ দোকানে বেশ ভিড়। হঠাৎ সেখানে হাজির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, সামনে কিছুটা রাস্তা হেঁটে এসে চা খাবেন। কিছুক্ষণ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেন আবু। সম্বিৎ ফিরতেই ছুটে গিয়ে বন্ধু দোকানি কৌসর মল্লিক দুধের প্যাকেট নিয়ে এলেন। তড়িঘড়ি দুধ-মিষ্টি কম দিয়ে চা তৈরি করলেন আবু। তখনও ঘোর কাটছে না তাঁর। পরে আবু বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমার দোকানে আসবেন ভাবতেও পারিনি। দুধ মজুত ছিল না, কৌসর দুধের প্যাকেট নিয়ে এলে ১৫ কাপ চা করি। মুখ্যমন্ত্রী ২০০ টাকা দিয়েছিলেন। আমি ৭৫ টাকা নিয়ে ১২৫ টাকা ফেরত দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে চা খাওয়াতে পেরে ভাল লাগছে।’’
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এই শিল্পতালুক বাইরে থেকে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে খড়্গপুর এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক সংলগ্ন একটি হোটেলে। তবে শুক্রবার ঘুর্ণিঝড় ফণীর সতর্কতায় সব রাজনৈতিক কর্মসূচি বাতিল করেছিলেন তিনি। হোটেল থেকে দিনভর নজরে রেখেছিলেন ঘুর্ণিঝড় সংক্রান্ত খবরে। যোগাযোগ রাখছিলেন দলের নেতাদের সঙ্গে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সকলকে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। মাঝরাতে খড়্গপুর হয়েই রাজ্যে ঢোকে ফণী। তবে শক্তিক্ষয় হয়ে যাওয়ায় প্রভাব তেমন পড়েনি। এ দিন সকালেই তাই হোটেল ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন মমতা। সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী। পরে গাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছন বিদ্যাসাগর শিল্পতালুক। সেখানে একটি স্টিলের বাসন তৈরির কারখানা থেকে শুরু করেন হাঁটা। ঘুরে দেখেন শিল্পতালুক। তার মাঝেই যান চা দোকানে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর শিল্পতালুকে আসার কথা জানতেন না তৃণমূলের জেলা নেতারাও। পরে খবর পেয়ে আসেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। হাঁটার পথে প্রদীপকে দেখে ডেকে নেন মমতা। বেশ কিছুটা পথে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাঁটতে দেখা যায় পুরপ্রধানকে। তখন শিল্পতালুকে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম দূর থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে দেখান প্রদীপ। এই স্টেডিয়ামের জন্য বরাদ্দকৃত টাকায় পাঁচিল হলেও মাঠের অনেক কাজ বাকি। সে কথা জানানোর পাশাপাশি শহরে একটি মিনি সার্কিট হাউজ এই শিল্পতালুকের স্টেডিয়াম সংলগ্ন জমিতে গড়া সম্ভব বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান প্রদীপ। পরে তাঁরা সকলেই চা খান। তারপর ফের কিছুটা হেঁটে গাড়িতে উঠে হোটেলে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। পরে পুরপ্রধান প্রদীপ বলেন, “স্টেডিয়ামের অবশিষ্ট কাজ শেষ ও সংলগ্ন জমিতে একটি মিনি সার্কিট হাউজ গড়ার যেতে পারে বলে প্রস্তাব দিয়েছি দিদিকে। উনি রাজি হয়েছেন। শহরের উন্নয়নে বারবার দিদির সাড়া পেয়ে আমি আপ্লুত।’’