জেলাশাসকের কাছে মনোনয়ন জমা দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। মঙ্গলবার।
সিপিএমে থাকার সময় বামপ্রার্থী হিসাবে লোকসভা ভোটে জিতে সাংসদ হয়েছেন। কিন্তু মনোনয়ন দিতে যাওয়ার আগে তাঁকে কখনও কোনও মন্দিরে পুজো দিতে দেখা যায়নি। তবে এখন তিনি অন্য দল তথা কংগ্রেসে এবং তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী। তাই মঙ্গলবার সকালে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে সপার্ষদ ছুটলেন বর্গভীমা মন্দিরে পুজো দিতে। পুজো দেওয়ার পর দুপুরে জেলা প্রশাসনিক অফিসে এসে মনোনয়ন পত্র জমা দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ।
জেলাশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘জয়ের জন্য লড়াই করছি। সব লড়াই কঠিন। কোনও কিছু সহজে হয় নাকি। জীবনটাই তো সংগ্রামের। প্রতিদ্বন্দ্বী অনেকেই আছেন।’’ প্রচারে নেমে ভোটারদের কী বলবেন? লক্ষ্মণবাবু বলেন, ‘‘তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের আরও উন্নয়ন করতে হবে। বিশেষ করে হলদিয়া-মেচেদা জাতীয় সড়ক আরও চওড়া করতে হবে। রায়চক-কুকড়াহাটির মধ্যে গঙ্গার উপর সেতু বানাতে হবে। হলদিয়া-নন্দীগ্রামের মধ্যে যোগাযোগের জন্য নদীর উপর সেতু বানাতে হবে। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বড় শিল্প গড়তে হবে। কৃষির উন্নয়ন করতে হবে।’’
জেলা শাসকের অফিসে মনোনয়ন জমার পর দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে শহরের হাসপাতালমোড় থেকে মিছিল করে মানিকতলা পর্যন্ত গিয়ে প্রচার চালান লক্ষ্মণ। মিছিলে ছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি মানিক ভৌমিক, জেলা আইএনটিউসি সভাপতি মিলন প্রধান, জেলা মহিলা কংগ্রেসের নেত্রী কেকা গুড়িয়া, জেলা যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শেখ আব্দুল মতিন, তমলুক লোকসভা কংগ্রেস নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান হৃষীকেশ মণ্ডল ও নির্বাচন প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান রমেন দত্ত প্রমুখ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এদিন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসিআই প্রার্থী মধুসূদন বেরা এবং কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের এসইউসিআই প্রার্থী মানস প্রধানও মনোনয়ম জমা দেন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে দু’জনেই দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে শহরের হাসপাতাল মোড় থেকে মিছিল করে জেলাশাসকের অফিসের কাছে যান।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বুধবার, তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থী দিব্যেন্দু অধিকারী ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী শিশির অধিকারী মনোনয়ন জমা দেবেন।
বিজেপির দুই প্রার্থী কবে মনোনয়ন জমা দেবেন তা ঠিক হয়নি বলে দলীয় সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, কাঁথির প্রার্থী পেশায় চিকিৎসক দেবাশিস সামন্তর প্রার্থীপদ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হিসাবে তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেন কি না সেই প্রশ্নর পাশাপাশি দলের মধ্যেও তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে অসন্তোষ ছিল। যদিও দেবাশিসের দাবি, তিনি ইতিমধ্যেই চাকরিতে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরে। কিন্তু তা গৃহীত না হওয়ায় হাইর্কোটে মামলা করেন তিনি। মঙ্গলবার মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। এই অবস্থায় তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। রাজ্য বিজেপির তরফে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার হাইকোর্টে শুনানি ছিল। কিন্তু তা হয়নি। শীঘ্রই ফের শুনানি হওয়ার কথা। বিষয়টি নিয়ে জট যদি না কাটে সে ক্ষেত্রে বিকল্প প্রার্থী ঠিক করা হবে। কারণ আসন খালি রাখা যাবে না।’’