মঙ্গলবার মহিষাদলে প্রচারে কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মণ শেঠ। নিজস্ব চিত্র
কয়েকশো অনুগামী নিয়ে মঙ্গলবার মহিষাদলের একাধিক জায়গায় দিনভর প্রচার চালালেন, রোড শো করলেন তমলুক লোকসভার কংগ্রেস প্রার্থী লক্ষ্মণ শেঠ। আর বার বারই তাঁকে সরব হতে দেখা গেল মহিষাদলের শিল্পের দাবি নিয়ে।
এ দিন গেঁওখালি, কেশবপুর, লক্ষ্যা, নামলক্ষ্যা অঞ্চলে রোড শো-এ লক্ষণবাবু মূলত পুরনো সম্পর্ক ঝালিয়ে নেন। প্রাক্তন এই বাম সাংসদ জানেন বরাবর ডানপন্থী রাজনীতিতে ঝুঁকে থাকা মহিষাদলে বহু কংগ্রেস কর্মী রয়েছেন। সেই ‘নিষ্ক্রিয়’ কংগ্রেস কর্মীদের চাঙ্গা করতেই এই রোড শো বলে জানালেন কংগ্রেস নেতা সুদর্শন মান্না। তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্মণবাবুকে দেখে বহু কংwগ্রেস কর্মী বেরিয়ে এসেছেন। জাতীয় কংগ্রেস করেন এমন বহু মানুষ আছেন এই এলাকায়। তাঁদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ শুরু করেছি।’’ স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল ধাড়া, সতীশ সামন্ত, কুমুদিনী ডাকুয়ার স্মৃতি বিজড়িত মহিষাদলে একবার বিধায়ক হয়েছিলেন লক্ষ্মণ জায়া তমালিকা পণ্ডা শেঠ। সেই সব যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে নিতেই এই উদ্যোগ বলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে।
এদিন কংগ্রেস প্রার্থী জানান, মহিষাদলের হিজলি টাইডাল ক্যানালকে কেন্দ্র করে ৫ নম্বর জাতীয় জলপথের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘আমার সময়ে এই ক্যানালকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এই ক্যানালের সঙ্গে একাধিক নদীকে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা হয়েছিল। এই খাতে ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। রাজ্যে সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর সেই প্রকল্প নিয়ে বর্তমান শাসক দল উদ্যোগী হয়নি।’’ এরপরেই তিনি জানান, ৫ নম্বর জাতীয় জলপথ সম্পূর্ণ হলে ছোট ছোট জাহাজ আসতে পারবে। ক্যানালের দুই পাশে গড়ে উঠতে পারে আরও শিল্প।’’ ক্যানাল সংস্কার হলে কৃষি ক্ষেত্রেও বিপ্লব হবে বলে লক্ষ্মণের দাবি। মহিষাদলকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও যাবতীয় বাধা দূর করার দাবি তোলেন লক্ষণ। বহু প্রাচীন মহিষাদলের ফেরিঘাটের প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেস প্রার্থী বলেন, ‘‘ফেরিঘাটের কিছুই উন্নতি হয়নি। এই গেঁওখালি থেকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুরে ফেরি চলাচল করে কিন্তু সেই ফেরি পরিষেবার কোনও উন্নতি হয়নি।’’ কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে গেঁওখালি থেকে নুরপুর হয়ে রো রো ভেসেল (গাড়ি পারাপার) চালানোর ব্যাপারে তিনি উদ্যোগী হবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর কথায়, ‘‘এতে মহিষাদলের সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব কমবে। মহিষাদলে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল হবে। তা ছাড়া মহিষাদল বিরাট জনপদ হলেও এখান থেকে কোনও এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা নেই। সে দিকেও নজর দেওয়া দরকার।’’ এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়েও শাসক দলের সমালোচনা করেন তিনি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
লক্ষ্ণণবাবুর প্রচার নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজনীতিতে লক্ষণবাবু এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছেন। পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর উদ্যোগেই এখানে নানা উন্নয়ন হয়েছে। মানুষ সব দেখছেন।’’