প্রতীকী ছবি।
বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে নজর ফের কেশিয়াড়িতে। শুরু হয়ে গিয়েছে শাসক-বিরোধী দু’তরফেই চিঠিচাপাটি।
ফের কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড দখলে ঝাঁপাচ্ছে তৃণমূল। শাসক দলের তরফে প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে সমিতির বোর্ড গঠনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার দাবি জানানো হয়েছে। তৃণমূলের দাবি, এই মুহূর্তে কেশিয়াড়িতে তারাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সমিতির ২৫ জন সদস্যের মধ্যে ১৪ জনই তাদের শিবিরে রয়েছেন। পাল্টা ‘চাল’ দিয়েছে বিজেপিও। তারাও প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে ‘দলবদলু’ সমিতির ২ জন সদস্যের সদস্যপদ খারিজের দাবি জানিয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, ওই ২ জন ‘পদ্মফুল’ প্রতীকে নির্বাচিত হন। পরে তৃণমূলে নাম লেখান। বিজেপি তাঁদের বরখাস্তও করেছে। গেরুয়া- শিবিরের মতে, দলত্যাগ আইনে ওই ২ জনের সদস্যপদ খারিজ হওয়া উচিত।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির দাবি, ‘‘কেশিয়াড়িতে এখন আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সে জন্যই দলের তরফ থেকে পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনে পদক্ষেপ করার দাবি জানানো হয়েছে।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ পাল্টা বলছেন, ‘‘আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন করতে দেয়নি তৃণমূল। পরে ভয় দেখিয়ে দল ভাঙানো হয়েছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক মানছেন, ‘‘তৃণমূলের তরফে চিঠি এসেছে। বিজেপির তরফ থেকেও এক চিঠি এসেছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ কেন বোর্ড গঠন ঝুলে রয়েছে? প্রশাসনের দাবি, আইনশৃঙ্খলাজনিত সমস্যার কারণেই বোর্ড গঠন স্থগিত রাখতে হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ২১টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ২০টিই তৃণমূলের দখলে রয়েছে। একমাত্র কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়নি পঞ্চায়েত নির্বাচনের দু’বছর পরেও! ২০১৮ সালের ভোটে ২৫টি আসনের মধ্যে ১৩টিতে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েছিল বিজেপি-ই। বাকি ১২টি আসন পায় তৃণমূল। ফলাফল ধুন্ধুমার বেধেছিল তখন। গণনায় কারচুপির অভিযোগে আন্দোলনে নামে বিজেপি। পরিস্থিতি দেখে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন কেশিয়াড়িতে। পরে কেশিয়াড়ি ‘পুনরুদ্ধারের’ দায়িত্ব বর্তেছিল শুভেন্দু অধিকারীর কাঁধে। অবশ্য কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি গঠন নিয়ে কিছু বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন তারপর থেকে ‘নিশ্চুপ’। ইতিমধ্যে কয়েকবার দলবদল কেশিয়াড়িতে। আপাতত তৃণমূলের শিবিরে ১৪ জন ও বিজেপির শিবিরে রয়েছেন ১১ জন।
জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের তরফে সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে ১৪ জন সদস্যের সই রয়েছে। এই ১৪ জনের মধ্যে রয়েছেন নবকুমার সিংহ এবং শান্তি মুর্মুও। ‘পাল্টা’ চিঠিতে প্রশাসনকে বিজেপি জানিয়েছে, নবকুমার সিংহ এবং শান্তি মুর্মুর সদস্যপদ দলত্যাগ আইনে খারিজ করা হোক। আইনানুযায়ী, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের যে কোনও ক্ষেত্রেই একসঙ্গে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত সদস্য দলত্যাগ করলে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ হবে না। কেউ এককভাবে দল ছাড়লে তাঁকে পদও ছাড়তে হবে।