পুরভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হল বুধবার। এ দিন ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি পুরসভাতেই সব চেয়ে বেশি নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, এবার মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী, ২৮ মার্চ শনিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ঘাটালের মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার রাজনবীর সিংহ কপূর বলেন, “সুষ্ঠভাবেই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে মনোনয়ন পত্র বাছাইয়ের কাজ শুরু হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাটাল পুরসভার বেশিরভাগ আসনেই প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। তবে কংগ্রেস ঘাটাল বাদে অনান্য পুরসভার সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে। এ দিন সকালে তমলুক শহরের শঙ্করআড়ায় বিজেপি জেলা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রার্থী সহ কর্মী-সমর্থকরা। এরপর সেখান থেকে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস, জেলা সহ-সভাপতি মলয় সিংহ, তমলুক শহর সভাপতি ললিত জানার নেতৃত্বে মিছিল করে জেলাশাসকের অফিসের সামনে এসে দলীয় প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে যান। পুরসভার ১৬ টি ওয়ার্ডে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। পুরসভার ৭, ১৭, ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থীকে সমর্থন করছে বিজেপি। আর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি। এদিন পুরসভার ১১ টি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। লক্ষ্মণ শেঠের নেতৃত্বাধীন ভারত নির্মাণ পার্টির সদস্যরাও কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে। তমলুক পুরসভার অধিকাংশ আসনে যে ভাবে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে তাতে এবার বেশির ভাগ আসনেই বহুমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
এ দিন কাঁথি পুরসভায় বিজেপির পক্ষ থেকে ২১ ওয়ার্ডে ও বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে ৩টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়। এগরা পুরসভায় ১৪টি ওয়ার্ডে এ দিন মনোনয়ন জমা দেয় বিজেপি। অন্যান্য দলের যে ক’টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন জমা দেওয়া বাকি ছিল, সেগুলিও আজ দেওয়া হয়। কয়েকটি ওয়ার্ডে মির্দলরাও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
তবে এ দিনের সব চেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য ঘটনা, পাঁচটি পুরসভার মধ্যে ঘাটাল-সহ সব পুরসভাতেই নির্দল প্রার্থীরা বেশি মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। যেমন, ঘাটাল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরসভার উপ-পুরপ্রধান উদয়শঙ্কর সিংহরায়ের খুড়তুতো দাদা গৌতম সিংহরায়ের স্ত্রী শর্মিষ্ঠা সিংহরায় নির্দল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন। এ ব্যাপারে দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “কোনও ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরোধী প্রচার করলে বা দলে থেকে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বি করলে বা সমর্থন করলে দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। এটা দলনেত্রীর নির্দেশও বটে।” এ দিকে রামজীবনপুরে গণতান্ত্রিক জোট প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। দু’একটি ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও (কংগ্রেস, সিপিআইএম ও বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল ও বিজেপি) তৃণমূলকে হারাতে এই জোট করেছে।