Lassi

Lassi Seller: ও শরবতে কি বিষ আছে!

গরম বাড়লেই শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠে লস্যি ও শরবতের দোকান। সেই ব্যবসা করেন খোলা জায়গায়।

Advertisement

গোপাল পাত্র

এগরা শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২২ ০৬:৫৫
Share:

রাস্তার পাশে শরবতের দোকান। নিজস্ব চিত্র

গনগনে রোদে কনকনে ঠান্ডা লস্যি অথবা শরবত। চুমুক শেষে তৃপ্ত অন্তর। কিন্তু সেই তৃপ্তিতেই বিপদ লুকিয়ে নেই তো? উঠছে প্রশ্ন। অভিযোগ, বেশি লাভের আশায় ক্ষতিক্ষারক ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ওইসব লস্যি আর শরবত। বাজার ও শহরের ফুটপাথের দোকানে এই অসাধু কারবার চললেও চুপ প্রশাসন থেকে পুরসভার কর্তারা।

Advertisement

গরম বাড়লেই শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠে লস্যি ও শরবতের দোকান। সেই ব্যবসা করেন খোলা জায়গায়। কেউ পলিথিন টাঙিয়ে। কেউবা ছাতার নীচে। উপকরণ বলতে দই অথবা লেবু। আর আছে বরফ। অভিযোগ, মাছ, আনাজ সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ ব্যবহার করা হয় লস্যি ও শরবত তৈরিতে। এই বরফ পরিস্রুত পানীয় জল দিয়ে তৈরি হয় না। তাই দামও কম। একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফের চাঁই কিনতে খরচ হচ্ছে আড়াশ থেকে তিনশো টাকা। একটি চাঁই থেকে প্রায় পাঁচশো গ্লাস লস্যি তৈরী হয়। প্রতি গ্লাস লস্যির দাম কুড়ি টাকা। অপরদিকে পরিস্রুত জলে তৈরি বরফের চাঁই কিনতে লাগে পাঁচশো টাকারও বেশি। স্বাভাবিক ভাবে বেশি লাভের আশায় ক্ষতিকর বরফ দিয়ে দিব্যি চলছে ব্যবসা।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নোংরা ও খারাপ জল থেকে তৈরি ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ দেওয়া লস্যি খেলে যক্ষ্মা ও কলেরার মতো জলবাহিত রোগের আশঙ্কা তৈরী হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘টাকা দিলেই আইসক্রিম কারখানা কর্মীরা আমাদের বরফের চাঁই দেয়। তারা কখনও আমাদের বরফের ভাল, খারাপ সম্পর্কে কিছু বলেনি। না বুঝেই এই বরফ কিনে ফেলেছি।’’

Advertisement

মহকুমা বা জেলা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের নিয়মিত এই সব দোকানে নজরদারি চালানোর কথা। অভিযান চালিয়ে খাবার সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার দায়িত্বও ওই দফতরের। যদি কোনও খাবার অস্বাস্থ্যকর হয় তা হলে সেই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। অভিযোগ, এগরা মহকুমা জুড়ে নিয়মিত নজরদারি বা খাবার সংগ্রহ করা হয় না। শুধু মাত্র ওয়েব পোর্টালে কোন অভিযোগ আসলে তা খতিয়ে দেখা হয়। শেষ কবে এই ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে সেই নিদির্ষ্ট তথ্য মহকুমা খাদ্য সুরক্ষা দফতর দিতে পারেনি।

মহকুমা খাদ্য সুরক্ষা দফতরের আধিকারিক মুকুলিকা বাগচি বলেন ‘‘ওয়েব পোর্টালে অভিযোগ এলেই সেই দোকানে খাবারের নমুনা সংগ্রহ কর জেলায় পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকে রিপোর্ট এলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আলাদা করে লস্যি বা শরবতের দোকানে নজরদারি রাখা হয় না। স্থানীয় ব্লক ও পুরসভা এই বিষয়ে আমাদের অসহযোগিতা করায় নিয়মিত নজরদারিতে সমস্যা হয়।’’ এগরার পুরপ্রধান স্বপন নায়ক বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পুরসভায় আলোচনা হয়েছে। আগামী শুক্রবার এগরা শহরে আইসক্রিম ও লস্যি দোকানে পুরসভার আধিকারিকেরা অভিযান চালাবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement