ঠিক যেন সিনেমা— দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে এসে মোটর বাইক আটকে এক কিশোরীকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। মেদিনীপুর শহরের বটতলাচকের ঘটনা। পথচলতি মানুষের চেষ্টায় অবশ্য আটকানো গিয়েছে অপহরণ। ধরা পড়েছে গাড়ির চালক-সহ দুই দুষ্কৃতী। তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। মূল অভিযুক্ত চন্দন সাসপিল্লি মেদিনীপুর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর টোটন সাসপিল্লির ভাই।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বুধবার চন্দন প্রতিবেশী এক নাবালিকাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। ওই নাবালিকার বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে অপহরণ করেছিল চন্দন। কিন্তু তাঁরা গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে আনেন। সে দিন এ বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বছর পনেরোর ওই কিশোরী এক আত্মীয়ের সঙ্গে মোটর বাইকে মহাতাবপুরের দিকে যাচ্ছিল। অভিযোগ তাঁরা পাড়া থেকে বেরোতেই গাড়ি নিয়ে পিছু নেয় চন্দনরা। মহাতাবপুরের কাছে আচমকা পিছন থেকে এসে পথ আটকে দাঁড়ায় গাড়িটি। চন্দন ও আরও দুই যুবক নেমে এসে জোর করে ওই কিশোরীকে গাড়িতে তুলে নেয়। কিন্তু সাহস করে কিশোরীর ওই আত্মীয়ও চলন্ত গাড়িতে উঠে পড়েন। পথচলতি এক ব্যক্তিও তাঁর মোটর বাইক নিয়ে ওই পিছু ধাওয়া করেন। শেষমেশ নগারচকের কাছে এসে ধরা পড়ে যায় গাড়িটি। কিশোরীর চিৎকার শুনে স্থানীয়দের কয়েকজন গাড়িটি ঘিরে ধরেন।
চন্দন এবং গাড়ির চালক রাজু বাগালকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাকি দুই যুবক অবশ্য পালিয়ে যায়। কিশোরীর বাবা রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ চন্দন এবং রাজুকে গ্রেফতার করে। এ দিন মেদিনীপুর আদালতে দু’জনের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ওই কিশোরীও আদালতে গোপন জবানবন্দি দিয়েছে। মেয়েটির ইচ্ছা অনুসারেই আদালত তাকে তার বাবার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে।
কিশোরীর বাবা বলেন, “মেয়েকে জোর করেই ওরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।” তার পরিবারের একাধিক সদস্যের দাবি, এ ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছিলেন কাউন্সিলর টোটন সাসপিল্লি। টোটন অবশ্য অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁর কথায়, “আমি কাউকে হুমকি দিইনি। চন্দন আমার কাকার ছেলে। কিন্তু যেটা দোষ, সেটা দোষই। আইন আইনের পথে চলবে।”