ত্রিফলা-হাইমাস্ট বসছে বড় রাস্তায়, গলিপথ আঁধারেই

ওড়িশা যাওয়ার পথে ব্যবসার জমজমাট এলাকা বেলদা। ব্যবসায়িক কাজকর্মের বাড়বাড়ন্তের সঙ্গেই বেড়েছে এলাকার পরিধি। তবে এখনও খাতায়তলমে পঞ্চায়েতই রয়ে গিয়েছে খড়্গপুর মহকুমার বেলদা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০০:২৯
Share:

ওড়িশা যাওয়ার পথে ব্যবসার জমজমাট এলাকা বেলদা। ব্যবসায়িক কাজকর্মের বাড়বাড়ন্তের সঙ্গেই বেড়েছে এলাকার পরিধি। তবে এখনও খাতায়তলমে পঞ্চায়েতই রয়ে গিয়েছে খড়্গপুর মহকুমার বেলদা। দু’বছর আগে পুরসভা করার কথা ঘোষণা হলেও তা হয়নি। তবে এরই মধ্যে একটু হলেও শহুরে ছোঁয়া পেতে চলেছে বেলদা। সাংসদ তহবিলের টাকায় বেলদার মূল সড়কে আলোর বন্দোবস্ত করছে পঞ্চায়েত সমিতি। শহুরে ধাঁচেই রাস্তায় বসছে ত্রিফলা ও হাই-মাস্ট আলো।

Advertisement

আলোয় ঝলমল বেলদা বহুদিন ধরেই এলাকাবাসীর দাবি ছিল। কারণ, এই রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। ফলে, স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা রাতে চলাফেরায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। কিছু গলিপথে আলো লাগানো হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা অকেজো হয়ে যায়। বেলদাবাসীর তাই প্রশ্ন ছিল, পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে পথবাতির জন্য কর নেওয়ার পরেও কেন এই অবস্থা হবে! এলাকাবাসীর দাবি মেনে তাই মেদিনীপুরের সাংসদ সন্ধ্যা রায় তাঁর তহবিল থেকে বেলদার পথে আলোর জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। সেই টাকাতেই পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে মূল রাস্তার ধারে বসানো হচ্ছে ত্রিফলা বাতি। জাতীয় সড়ক ছেড়ে বেলদা ঢোকার মুখে কালীমন্দির থেকে গাঁধীমূর্তি হয়ে বেলদা পেট্রোলপাম্প পর্যন্ত বসছে ত্রিফলা। ইতিমধ্যেই পেট্রোলপাম্প থেকে গাঁধীমূর্তি পর্যন্ত ত্রিফলা বসানো হয়ে গিয়েছে। এখন গাঁধীমূর্তি থেকে কালীমন্দির পর্যন্ত ত্রিফলা বসানোর কাজ চলছে। এর পরে গাঁধীমূর্তি ও কেশিয়াড়ি মোড়ে হাই-মাস্ট বাতিস্তম্ভ বসানো হবে বলে পঞ্চায়েত সমিতি জানিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সনাতন মঙ্গল বলেন, “বেলদার সৌন্দর্যায়নে ত্রিফলা বাতি বসানোর কাজ প্রায় শেষ। এ বার দু’টি হাই-মাস্ট বাতিস্তম্ভ বসানো হবে। এতে উপকৃত হবেন বেলদার পথচলতি মানুষ।”

তবে এই উদ্যোগে বেলদার মূল এই সড়কপথে আলোর অভাব কাটলেও অন্যত্র সেই আঁধার থেকেই যাবে বলে এলাকাবাসীর দাবি। বিশেষ করে রবীন্দ্রনগর, নবোদয়পল্লি, স্টেশন সংলগ্ন সড়ক সন্ধে নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, অধিকাংশ এলাকায় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও যথেষ্ট সংখ্যক পথবাতি লাগানো হয়নি। কিছু এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারাই নিজেদের খরচে পথে আলো লাগিয়েছেন। বেলদার রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা ব্যাঙ্ককর্মী অশোক বিশ্বাস যেমন বলেন, “আমাদের এলাকায় পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে কিছু আলো লাগানো হয়েছে। কিন্তু ওই আলো প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম। ফলে, পথে চলতে সমস্যা হয়।”

Advertisement

শুধু গলিপথ নয়, শহরের বিভিন্ন অংশে মূল সড়কেও আলোর অভাব রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। এমনকী বেলদার মূল সড়ক থেকে গাঁধীমূর্তি হয়ে ডান দিকে দাঁতন বাসস্ট্যান্ডে যাওয়ার রাস্তাতেও আলোর অভাব। স্থানীয় ব্যবসায়ী রাজু চাণ্ডকের কথায়, “মূল সড়কে আলো বসছে ভাল কথা। কিন্তু গলিপথেও আলোর অভাব রয়েছে। পুরসভা ঘোষণার পরেও এমন হবে কেন!’’ বিশেষ করে পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বাড়ির করের ১০ শতাংশ যেখানে পথবাতি বাব নেওয়া হয়, সেখানে কেন শুধু মূল সড়কপথে আলো বসানো হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলছেন বেলদাবাসী।

এ ব্যাপারে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সনাতনবাবুর বক্তব্য, “সাংসদ তহবিলের টাকায় আমরা আপাতত মূল সড়কে আলো বসাচ্ছি। গলিপথে আলো বসানোর কাজ করে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত। আমাদের অর্থাভাবও রয়েছে।” স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুমিত চট্টোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, “আমাদের আর্থিক ক্ষমতা সীমিত। তা সত্ত্বেও আমরা প্রতিবছর পুজোর আগে কিছু এলাকায় পথবাতি বসাই। এ বারও ৬৫টি এলইডি আলো বসিয়েছি।’’ এর পরেও যে সব এলাকায় আলোর অভাব রয়েছে সেখানে ভবিষ্যতে পথবাতি লাগানোর চেষ্টা করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন উপপ্রধান। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দও বলেন, “পঞ্চায়েতের কাছে পথবাতির বাড়ানোর জন্য আমাদের প্রস্তাব রয়েছে। আশা করছি কাজ হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement