তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) পরিচালিত ছাত্র সংসদের উদ্যোগে কেশপুর কলেজে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে বিস্তর খরচ ঘিরে শোরগোলের মধ্যেই নতুন তথ্য। গত বছর এই অনুষ্ঠান করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। এক দিনের সেই অনুষ্ঠানে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছিল ১ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। অথচ, এ বছর ২৩ মার্চের সেই অনুষ্ঠান যখন ছাত্র সংসদ করল, তখন খরচ হয়েছে ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
এই তথ্য সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল এবং টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। টিএমসিপির এক জেলা নেতা মানছেন, “কেশপুর কলেজের ওই ঘটনায় সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে!” পাশাপাশি তাঁর দাবি, “বিষয়টি সাংগঠনিকস্তরেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হিসেবে যদি দুর্নীতি থাকে, তাহলে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।” খরচে গরমিল থাকলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন টিএমসিপির রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তও।
রাজ্যে পালাবদলের আগে পর্যন্ত কেশপুর কলেজের প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন হত কলেজ-কর্তৃপক্ষের উদ্যোগেই। পালাবদলের পরে ছবিটা বদলাতে শুরু করে। প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপনের রাশ নিতে শুরু করে টিএমসিপি-র ছাত্র সংসদ। তবে এই সময়ের মধ্যে যে প্রতি বছরই প্রতিষ্ঠা দিবস ছাত্র সংসদের উদ্যোগে পালিত হয়েছে তা নয়। কখনও ছাত্র সংসদ তো কখনও কলেজ-কর্তৃপক্ষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অবশ্য কখনও এ বারের মতো বিপুল খরচ হয়নি।
কলেজের একাংশ শিক্ষকের মতে, অনুষ্ঠানের ভার ছাত্র সংসদের হাতে যাওয়ার ফলেই প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের খরচ তিনগুণ হয়ে গিয়েছে। সাধারণত, কলেজ-কর্তৃপক্ষই প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপনকরেন। আর বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে ছাত্র সংসদ। কেশপুর কলেজে সেই প্রথা ভাঙা হয়েছে।
তবে তিনগুণ খরচ হলেও গতবারের থেকে এ বছর অনুষ্ঠানে বিশেষ ফারাক ছিল না বলেই প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। কলেজের এক শিক্ষাকর্মীর কথায়, “গতবারও নাচ-গান-খাওয়াদাওয়া সব হয়েছিল। তাও এত টাকা খরচ হয়নি।”
কেন প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজনের ভার ছাত্র সংসদকে দেওয়া হল? প্রশ্ন শুনে সোমবার মেজাজ হারান কলেজের অধ্যক্ষ দীপক ভুঁইয়া। রাগত স্বরে বলেন, “আমি ওই দিনের অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোনও মন্তব্যই করব না।” খরচ নিয়ে বিতর্কের পরে অবশ্য কলেজের পরিচালন সমিতি ঠিক করেছে, এ বার থেকে সব অনুষ্ঠানের আয়োজনই হবে সমিতির বৈঠকে আলোচনা করে।