শ্রমজীবী ক্যান্টিনে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজো শেষ। পুজোর মরসুম শেষ নয়। চলছে করোনার সঙ্গে লড়াইও। এরমধ্যেই এসে পড়ছে ভোটের মরসুম। করোনা আর মানবিকতার মাঝে কি ঢুকে পড়বে ইভিএম! বাম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘মানুষ বাঁচলে তবে তো রাজনীতি।’’
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। ঝাড়গ্রাম শহরে সিপিআইয়ের ছাত্র ও যুব সংগঠনের উদ্যোগে চলছে ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’। বুধবার সেখানেই পরিদর্শনে এসেছিলেন প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। ক্যান্টিনের কাজকর্ম দেখে সিপিআইয়ের ছাত্র ও যুব সদস্যদের করজোড়ে নমস্কার জানিয়ে কান্তি বলেন, ‘‘এভাবেই তোমরা মানুষের কাজ করে যাও। মানুষ বাঁচলে তবে তো রাজনীতি! কিন্তু সেটা তৃণমূল ও বিজেপি-র মতো দলগুলি ভাবে না।’’ ক্যান্টিন চালানোর জন্য এদিন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর পক্ষ থেকে দু’হাজার টাকা সাহায্যও দেন কান্তি। তিনি ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকও। প্রসঙ্গত, আমফান পরবর্তী পর্বে সুন্দরবনে কান্তির ভূমিকা সমাজের নানা স্তরে প্রশংসিত হয়েছে।
১ অক্টোবর থেকে সিপিআইয়ের ছাত্র সংগঠন এআইএসএফ এবং যুব সংগঠন এআইওয়াইএফ-এর যৌথ পরিচালনায় অরণ্যশহরে চলছে ‘শ্রমজীবী ক্যান্টিন’। রেল স্টেশন লাগোয়া সিপিআইয়ের শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র কার্যালয়ে ওই ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। মাত্র কুড়ি টাকায় প্রতিদিন দুপুরে ভরপেট খাবার মেলে সেখানে। কোনও দিন মাছ-ভাত, কোনও দিন মাংস-ভাত, কোনওদিন আবার ডিম-ভাত, কোনও দিন নিরামিষ দু’তরকারি-ভাতও। সপ্তাহের সাতদিনই ওই ক্যান্টিন থেকে দুপুরে সুলভ দামে খাবার পাওয়া যাচ্ছে। সিপিআইয়ের জেলার দুই সহ সম্পাদক বিকাশ ষড়ঙ্গী ও অসীম রায় জানালেন, যাঁদের একেবারেই দাম দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তাঁদের খাবার দেওয়া হয় বিনামূল্যে। লকডাউন পর্বে সিপিআইয়ের উদ্যোগে বেশ কিছুদিনের জন্য ঝাড়গ্রাম জেলায় ‘চলমান ক্যান্টিন’ চালু করে বিনামূল্যে খাবার বিলি করা হয়েছিল। সেই সময়েই শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষজনের জন্য স্থায়ী ক্যান্টিন গড়ার ভাবনা আসে। যাদবপুরের শ্রমজীবী ক্যান্টিন দেখে ঝাড়গ্রামেও অনুরূপ ক্যান্টিন চালু করার জন্য দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ক্যান্টিন থেকে প্রতিদিন দু’শো জনের খাবার দেওয়া হয়। সকালে আগাম কুপন সংগ্রহ করতে হয়। দুপুরে খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়। কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের দানে চলছে শ্রমজীবী ক্যান্টিন। ক্যান্টিনের স্লোগান: ‘কেউ খাবে, কেউ খাবে না, তা হবে না, তা হবে না’।
পুজোর দিন গুলিতেও চালু ছিল ক্যান্টিন। ভোট-পুজো পরে। শ্রমজীবী মানুষের পেটপুজোর লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছে ক্যান্টিন।