মঙ্গলবার বেলপাহাড়ির দুই সাংস্কৃতিক কর্মীর সঙ্গে কমলেশ্বর। ছবি সমাজমাধ্যম থেকে পাওয়া।
‘চাঁদের পাহাড়’-এর পরিচালক ঘুরে গেলেন জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে। সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন লোকেশনে তাঁর পরবর্তী ছবির শ্যুটিং করার ব্যাপারে আগ্রহী পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। গত সোমবার জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে প্রয়োজনীয় অনুমতির ব্যাপারে কথাও বলেছেন পরিচালক। পাশাপাশি স্থানীয় একাধিক শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে প্রাথমিক কথাও বলেছেন কমলেশ্বর।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার বেলপাহাড়ির বিভিন্ন এলাকাও দেখে এসেছেন। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি কমলেশ্বর। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের লোকেশনের কথাও ভেবেছেন পরিচালক। তবে ঝাড়গ্রামকেও নজরে রেখেছেন কমলেশ্বর। তবে জেলায় বড় ব্যানারের ছবির শ্যুটিংয়ের সম্ভাবনাকে ঘিরে আশার আলো দেখছেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। জঙ্গল-পাহাড়-ঝর্না, রাজপ্রাসাদের আকর্ষণে পঞ্চাশের দশকের শেষের দিক থেকেই বাংলা ছবির রুপোলি পর্দায় বারে বারেই উঠে এসেছে ঝাড়গ্রাম। গত বছর ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এসে রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘অনেকেই ঝাড়গ্রামকে নিয়ে ভাবেন। কাহিনীর বিষয়বস্তুর উপরে আউটডোর লোকেশন ঠিক করা হয়। সে রকম কাহিনী হলে অবশ্যই এখানে শ্যুটিং হবে।’’
ঝাড়গ্রামের পর্যটনে শ্যুটিংস্থলগুলিও গুরুত্বপূর্ণ। ‘ঝাড়গ্রাম টুরিজ়ম’ সংস্থার উদ্যোগে ফিল্ম টুরিজ়ম প্যাকেজও রয়েছে। ঝাড়গ্রামের যে সব জায়গায় কালজয়ী সব ছবির শ্যুটিং হয়েছে, সেই এলাকাগুলি পর্যটকদের ঘুরিয়ে দেখানো হয়। ‘মরুতীর্থ হিংলাজ’, উত্তম কুমার অভিনীত ‘বাঘবন্দি খেলা’, ‘রাজবংশ’ ও ‘সন্ন্যাসী রাজা’, ‘বেহুলা লখীন্দর’, ‘চারমূর্তি’, ‘অরুন্ধতী’, ‘আমার মায়ের শপথ’, ‘ব্রেক ফেল’, ‘টিনটোরেটোর যিশু’, ‘বাদশাহী আংটি’, ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’, ‘মেঘনাদ বধ রহস্য’-এর মতো বেশ কিছু ছবির শ্যুটিং হয়েছে ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন এলাকায়। এ বার কমলেশ্বর যদি তাঁর পরবর্তী ছবির শ্যুটিং ঝাড়গ্রামে করেন, তা হলে সেটা অবশ্যই অরণ্যসুন্দরী জেলার মুকুটে ‘নতুন পালক’ জুড়বে বলে মনে করছেন স্থানীয় সংস্কৃতি মহল।
জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় শ্যুটিংয়ের অনুমতির বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলেন। শ্যুটিং করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। তবে দৃশ্যগ্রহণে ড্রোন ব্যবহার করা হলে অনুমতি নিতে হয়।’’ জেলাশাসক জানান, যেহেতু কিছু এলাকায় হাতির গতিবিধি থাকে, তাই আগাম জানিয়ে শ্যুটিং করলে ভাল হয়। জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘কমলেশ্বরবাবু ঝাড়গ্রামে শ্যুটিং করলে পুলিশের তরফে সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছি।’’ বেলপাহাড়ি টুরিজ়ম অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক রাহুল অধিকারী বলেন, ‘‘বুধবার কমলেশ্বরবাবু বেলপাহাড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেছেন। এখানে বড় বাজেটের ছবির শ্যুটিং হলে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসীরাও উপকৃত হবেন।’’