সাজাপ্রাপ্ত অজয় দণ্ডপাট। সোমবার ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত চত্বরে। নিজস্ব চিত্র।
নাবালিকাকে আটকে রেখে ধর্ষণের দায়ে এক তরুণকে ২০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিল ঝাড়গ্রাম পকসো আদালত। সোমবার ওই আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায় সাজা ঘোষণা করেন।সাজাপ্রাপ্ত বছর চব্বিশের অজয় দণ্ডপাটের বাড়ি জামবনি থানার চিল্কিগড়ে।
ঝাড়গ্রাম পকসো আদালতের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি জয়ন্ত রায় জানান, পকসো আইনের ৬ ধারায় ২০ বছর কারাবাসের পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্তকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন বিচারক। এ ছাড়া ইচ্ছার বিরুদ্ধে নাবালিকাকে আটকে রাখার জন্য সাজাপ্রাপ্তকে আরও ৫০০ টাকা জরিমানা ধার্য করেছে আদালত। বিচারক আদেশনামায় নির্যাতিতাকে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে বলেছেন।
২০২০ সালের ১১ জুলাই জামবনি থানায় বছর ষোলোর ওই নাবালিকা অজয়ের বিরুদ্ধে তাকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। জেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই নাবালিকা মামার বাড়িতে থাকত। অজয় তাকে প্রেমের টোপ দিয়ে চিল্কিগড় রাজবাড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে ২০২০ সালের ৯ জুলাই জোর করে ধর্ষণ করেছিল বলে অভিযোগ। নাবালিকা কোনও মতে মামার বাড়িতে পালিয়ে এসে পরিবারের সদস্যদের সব জানিয়েছিল। নাবালিকার অভিযোগের ভিত্তিতে পকসো আইন ও ধর্ষণের ধারায় মামলা করে অজয়কে ধরে পুলিশ। ওই সময় তার বয়স ছিল ২১ বছর।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছিল পুলিশ। পরে অবশ্য অভিযুক্ত শর্তাধীন জামিনে ছাড়া পেয়ে যায়। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১ (জোর করে আটকে রাখা), ৩৭৬ (ধর্ষণ) ও পকসো আইনের ৬ ধারায় চার্জ গঠন করে ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে মামলার বিচার শুরু হয়। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। শুক্রবার শুনানির শেষ দিনে অজয়কে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। ওই দিনই অজয়কে জেল হাজতে নেওয়া হয়। সোমবার বিচারক সাজা ঘোষণা করেন। সাজা শোনার পর দৃশ্যতই ভেঙে পড়ে অজয়। আদালত থেকে বেরিয়ে প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছিল সে। অজয়ের আইনজীবী অবশ্য জানিয়েছেন, পকসো আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে।