ফাইল চিত্র।
কংসাবতীর জলাধার তো ছিলই, এবার ডিভিসি এবং গালুডি জলাধার থেকেও জল ছাড়া হয়েছে। তাতে জেলায় কাঁসাই ও চণ্ডীয়া জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। জেলার পরিস্থিতির আরও অবনতি আশঙ্কা করে এর কারণ হিসাবে ওই জল ছাড়াকেই দায়ী করছেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তিনি বলছেন, ‘‘সমস্ত জলাধার কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছি, আপনারা নিয়ন্ত্রিতভাবে জল ছাড়ুন। বিশেষ করে ডিভিসি। ডিভিসি এ দিনও জল ছেড়েছে। আবহাওয়া দফতরের যে রিপোর্ট, তার উপর নির্ভর করে জলাধার কর্তৃপক্ষ যদি ধাপে ধাপে জল ছাড়তেন,তাহলে এরকম বিপর্যয়ের সম্ভবনা দেখা দিত না।’’
উল্লেখ্য, কংসাবতী জলাধার থেকে বৃহস্পতিবার দু’লক্ষ ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। শুক্রবার ফের এক লক্ষ ৯৪ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। ফলে কাঁসাই, চণ্ডীয়া নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেয়ে পাঁশকুড়া এবং ময়না ব্লকে নতুন করে বিপদের আশঙ্কা দেখা গিয়েছে। ওই দুই নদী বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া, গালুডি জালাধার থেকে এক লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অর্থাৎ ঝাড়খণ্ডের বেশিরভাগ জল এই সব নদীতে আসছে। সেচ মন্ত্রী দাবি, এই সবের প্রভাব পড়ছে এ রাজ্যে।
এ দিন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র তমলুক শহরে রূপনারায়ণ নদের বাঁধ, সংলগ্ন গঙ্গাখালি, পায়রাটুঙ্গিখালের বিভিন্ন জায়গায় বাঁধের ধসের পরিস্থতি পরিদর্শন করেন়। এ নিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিক ও পুরসভা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করেন তিনি। নির্দেশ দেন ক্ষতিগ্রস্ত অংশের মেরামতির।
পটাশপুরের তালছিটকিনিতে কেলঘাইয়ের ভাঙা নদী বাঁধ মেরামতির কাজ এ দিন ফের পরিদর্শন করেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, বিডিও পারিজাত রায় প্রমুখ। স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঁধ মেরামতির কাজের গতি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। পটাশপুর-১ ব্লকের বড়হাট গ্রাম পঞ্চায়েতে প্লাবিত এলাকার পরিস্থিতিও জটিল আকার ধারণ করেছে। এ দিন বড়হাট পঞ্চায়েতে একাধিক ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করে শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ করেন রাজ্যের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি। ছিলেন পটাশপুর-১ ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি বিনয় পট্টনায়ক, প্রধান দীপক মহাপাত্র প্রমুখ। এগরা-২ ব্লকের দুবদা খাল এলাকায় কয়েকশো একর আমন চাষের জমিতে জল রয়েছে। পচে নষ্ট হয়েছে আমন ধানের চাষ। এ দিন এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি ওই এলাকা পরিদর্শন করেন।
এ দিকে, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির জেরে বৃহস্পতিবার হলদিয়ার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের চকতাড়োয়ান এলাকায় একটি কাঁচা বাড়ি ধসে যায়। তাতে কালু সিংহ নামে এক ভ্যান চালক সপরিবারের থাকতেন। পুরসভার সহযোগিতায় কালুর পরিবারকে ধসে যাওয়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।