কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে লৌহ আকরিক প্লটে মজুত করা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
যান্ত্রিক পদ্ধতিতে লৌহ আকরিক খালাসের কাজ শুরু বন্দরে। এর ফলে পণ্য হ্যান্ডলিং খরচ কমবে অনেকটাই, দাবি হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষের।
হলদিয়া বন্দরে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে লৌহ আকরিক বোঝাই মালগাড়ি খালাসের কাজ। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হলদিয়া বন্দরের ৩ নম্বর বার্থটি বন্ধ ছিল। এই বার্থে মূলত কয়লা ওঠানো নামানোর কাজ হত। পরবর্তী কালে কয়লার দাম বেড়ে যাওয়া এবং একাধিক সমস্যায় সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দক্ষিণ ভারতের একটি সংস্থা কয়লা নেওয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। এতদিন পর্যন্ত এই বার্থ বন্ধ অবস্থায় ছিল। ২০২১ সালে এই বার্থটি ফের কাজে লাগানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই মত বার্থটি লৌহ আকরিক ওঠানো নামানোর কাজে ব্যবহার করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়। কয়লার বদলে লৌহ আকরিক ব্যবহার করার জন্য সেই রকম যান্ত্রিক নকশা অনুযায়ী রূপান্তরিত করা হয় বার্থটিকে।
তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে কী ভাবে পণ্য খালাসের খরচ কমানো যায় সেই উপায় খুঁজছিলেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। আগে মূলত মানব শ্রমের মাধ্যমে লৌহ আকরিক পণ্য খালাস করা হত। এতে সময় এবং খরচ লাগতো অনেক বেশি। বর্তমানে যে পদ্ধতি চালু হয়েছে, সেটা হল রেল ওয়াগন থেকে সরাসরি ট্রিপলারে লৌহ আকরিক চূর্ণ পড়বে। এরপর কনভেয়ার বেল্ট-এর মাধ্যমে সেটিকে মূল প্লটে আনা হবে। এতদিন এটাই শ্রমিকদের দিয়ে করানো হত।
উল্লেখ্য, ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ৪৮ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহণের কাজ করেছে হলদিয়া বন্দর। এই পদ্ধতি চালু হলে সেই পরিমাণ স্বভাবতই আরও বাড়বে বলে আশা বন্দর কর্তৃপক্ষের। আগে যেখানে লৌহ আকরিক মালগাড়ি থেকে খালাস করতে মেট্রিক টনপ্রতি ৫৩০ টাকা খরচ হত। এখন সেই খরচ নেমে আসবে ১৭০ থেকে ১৬০ টাকায়। শুধু তাই নয়, এ ক্ষেত্রে সময়ও লাগবে অনেক কম।
শ্রমিক জোগানের জন্য অন্য একটি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হলেও পণ্য পরিবহণের কাজ হবে বন্দর কর্তৃপক্ষের আওতায়। বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (ট্রাফিক) অভয় মহাপাত্র বলেন, এই পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে লৌহ আকরিক পরিবহণের আগের খরচের মাত্র এক তৃতীয়াংশ খরচ হবে। খরচ কমলে স্বভাবতই লাভবান হবে রফতানিকারক সংস্থাগুলি। এতে হলদিয়া বন্দরে জাহাজের সংখ্যাও বাড়বে।"