Vegetable Price

কেন ভিন্ন দর! প্রশ্ন পরিদর্শকদের 

দু’হাত অন্তর দু’টি দোকানে একই আনাজের দামে ফারাক। এখানে আলু ৩০ টাকা কিলো, ওখানে ৩৫ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৪ ০৮:১০
Share:

আনাজের দর জানতে বাজারে ঘুরলেন মহাকুমাশাসক। মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজারে। নিজস্ব চিত্র।

এত দাম কেন? মহকুমা শাসকের প্রশ্ন শুনে দোকানি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন পাইকারি বাজারেই বেশি দাম। মানতে নারাজ মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক মধুমিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি যেতে চাইলেন আড়তে। কিন্তু কোন আড়তে যাবেন? কেউ জিনিস কেনেন দাসপুর থেকে। কেউবা বেলদা থেকে কেনেন। দোকানদারদের অনেকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন আনাজের গুণগত মান ভেদে দামের পরিবর্তন হয়। তবে সে চেষ্টা সফল হয়নি।

Advertisement

শুক্রবার সকাল। মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজারে হাজির প্রশাসনিক দল। নেতৃত্বে মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক। দেখা যায়, দু’হাত অন্তর দু’টি দোকানে একই আনাজের দামে ফারাক। এখানে আলু ৩০ টাকা কিলো, ওখানে ৩৫ টাকা। এখানে আদা ১৬০ টাকা কিলো, ওখানে ১৮০ টাকা। দোকানিদের উদ্দেশে মহকুমাশাসককে বলতে শোনা গেল, ‘‘একই বাজারে একই আনাজের দামের ফারাক কেন? ফারাক থাকবে না। কোনও আনাজই বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।’’ এক দোকানি মহকুমাশাসককে বললেন, ‘‘খুচরো বাজারে আদা ১৬০ টাকা কিলো দরে বিক্রি করব কী ভাবে? পাইকারি দরই তো ১৬০ টাকা। কিলোতে ২০ টাকা লাভ রাখব না?’’ এরপরই মহকুমা শাসক জানিয়ে দেন, দামের ফারাক বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে আড়তদারের কাছ থেকে যাচাই করার কথাও জানান তিনি। দিন দশেক পরে ফের আসার কথা জানিয়ে যান মহকুমা শাসক।

এ দিন সকালে শহরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টির মধ্যেই রাজাবাজারে দোকানে দোকানে চলেছে পরিদর্শন। কোন দোকানে, কোন আনাজের কী দর, দেখা হয়েছে। যেখানে দর খানিক বেশি ছিল, সেখানে দোকানির কাছ থেকে জানা হয়েছে, তিনি কোন আড়ত থেকে আনাজ নিয়েছেন। আড়তে পাইকারি দর কত ছিল। পাইকারি দরের রসিদও দেখতে চেয়েছে পরিদর্শক দল। পরে মহকুমাশাসক বলছিলেন, ‘‘দামের হেরফের যাতে না থাকে, সেটা দেখছি। যা পদক্ষেপ করার, করছি।’’ একাংশ দোকানি দাবি করেছেন, আমদানি কম ছিল বলেই কিছু আনাজের দাম বেড়েছে। আমদানি হলেই দাম
কমে যাবে।

Advertisement

মেদিনীপুরের মতো পরিদর্শন হয়েছে ঘাটালেও। এ দিন ঘাটাল শহরের প্রগতি বাজার ও কুঠিবাজারে হানা দেন টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকেরা। কোন আনাজের কত দাম, তার নজদারির পাশাপাশি কোনও দোকানে ওজনে কারচুপি করা হচ্ছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়। ওজন যন্ত্রে গোলমালের অভিযোগে একাধিক ওজন যন্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাজারে নজরদারির পাশাপাশি আলু ও পেঁয়াজের আড়তগুলিতেও অভিযান চালায় টাস্ক ফোর্স। অভিযানে ছিলেন ঘাটালের এ দিনের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস-সহ আরও অনেকে। ছিলেন লিগ্যাল মেট্রোলজি ও জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিকেরাও।

মেদিনীপুরের মতো ঘাটালেও দামের ফারাক লক্ষ্য করে পরিদর্শক দল। তবে এ ক্ষেত্রে ফারাক ছিল দু’টি বাজারে। আলু দামের হেরফেরও চোখে পড়ে পরিদর্শন। পাইকারি দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আনাজ বিক্রি করার নির্দেশ দেন আধিকারিকরা। চড়া দামে মালপত্র বিক্রি করলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও শোনানো হয়। বাজারে গিয়ে ওজন যন্ত্রগুলি খতিয়ে দেখেন আধিকারিকেরা। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘‘দাসপুরের প্রত্যেক পাইকারি বাজারগুলিতেও টাস্ক ফোর্স
অভিযান চালাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement