প্রতীকী ছবি।
রাজ্যজুড়ে ১১ ডিসেম্বর বঙ্গধ্বনি কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে ২৯৪টি বিধানসভাতেই এই কর্মসূচি পালিত হবে। বঙ্গধ্বনি কর্মসূচিতে কারা নেতৃত্ব দেবেন তার তালিকাও পাঠানো হয়েছে রাজ্য নেতৃত্বর তরফ থেকে। হলদিয়া বিধানসভাতেও এসেছে বঙ্গধ্বনিতে নেতৃত্বের নামের তালিকা। দেখা গিয়েছে, সেখানে নাম নেই একাধিক হেভিওয়েট নেতার। যা নিয়ে দলের অন্দরে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আভাস মিলেছে।
উল্লেখ্য, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস তথা হলদিয়া বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে বঙ্গধ্বনি কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। শুক্রবার সুতাহাটার সুবর্ণজয়ন্তী ভবন থেকে মঞ্জুশ্রী ক্ষুদিরাম স্কোয়ার পর্যন্ত কর্মসূচির আওতায় মহামিছিল হবে। মিছিলে কারা নেতৃত্ব দেবেন তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্বের তরফে। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির সই করা ১৩ জনের নামের তালিকা হলদিয়া বিধানসভা এলাকায় পৌঁছেছে। তালিকাকে তিনটি দলে ভাগ করা হয়েছে। ১৩ জনের কমিটিতে আছেন হলদিয়া শহর তৃণমূল সভাপতি সুধাংশু শেখর মণ্ডল, হলদিয়া শহর তৃণমূল সহ-সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল, হলদিয়ার পুর পারিষদ স্বপন নস্কর ও জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক তুষার মণ্ডল সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। ১৩ জনের তালিকায় অনেক পরিচিত মুখেরই দেখা নেই। যেমন নেই হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামল কুমার আদকের নাম। বিধানসভার কো-অর্ডিনেটর আনন্দময় অধিকারীর নামও দেখা যায়নি। বাদ গিয়েছে, সুতাহাটা ব্লকের তৃণমূল যুব সভাপতি মহাপ্রসাদ পাত্রের নাম। বদলে সুতাহাটা ব্লকের দুই যুব তৃণমূল সহ-সভাপতি অভিষেক দাস ও শেখ আব্দুল হাসান-সহ বেশ কিছু আদি তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে তালিকায়। যা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে দলের অন্দরে।
তৃণমূলের একাংশ সূত্রে খবর, যাদের নাম বাদ গিয়েছে তারা শুভেন্দু পন্থী হিসেবে পরিচিত। এক সময় দলীয় নেতৃত্বের রাশ ছিল তাদের হাতেই। গত কয়েক মাসে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে টালমাটালের জেরে কার্যত সেইসব নেতা এই মূহূর্তে দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আদি তৃণমূলপন্থীদের প্রচারের মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে দলের রাজ্য নেতৃত্ব। যার ফলে একের পর এক কর্মসূচির দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে তাদের কাঁধে।
রাজনৈতিক মহলের মতে শুভেন্দু পন্থীদের উপর আর বিশ্বাস রাখতে চাইছে না বা পারছে না তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সে জন্যই নতুন করে নেতৃত্ব সাজাতে হচ্ছে। যদিও এভাবে পরিচিতদের ব্রাত্য করে দেওয়ায় দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাড়বে। কারণ শুভেন্দু অধিকারী সহ তাঁর অনুগামীরা এখনও তৃণমূলেই রয়েছেন।
দলে এই নিয়ে যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তার প্রমাণ, সুতাহাটা ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতি মহাপ্রসাদ পাত্র বলেন, ‘‘আমার ব্লকের দুই সহ-সভাপতির নাম আছে। আমি সভাপতি আমারই নাম নেই। দলের এই আচরণে চরম অপমানিত বোধ করছি। ২০০৮ সাল থেকে জনপ্রতিনিধি হওয়া সত্ত্বেও যদি এমন অপমান সহ্য করতে হয় তা হলে কিছু বলার নেই। আমি রাজ্য নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাব।’’
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক তুষার মণ্ডলের কথায়, ‘‘কারা এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেবেন রাজ্য নেতৃত্বের তরফে তালিকা পৌঁছেছে আমাদের কাছে। রাজ্য নেতৃত্ব বিবেচনা করে তালিকা তৈরি করেছেন। কে কেন তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তার কারণ রাজ্য নেতৃত্বই বলতে পারবেন।’’