পুজো শুরু। নিজস্ব চিত্র
শুরু হয়ে গেল গড়বেতার মঙ্গলাপোতা রাজবাড়ির দুর্গোৎসব। শুক্রবার ছিল জিতাষ্টমী। রাজ পরিবারের প্রথা মতো এ দিন সন্ধ্যায় বেলবরণের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে আবাহন করে পুজোর সূচনা হয়। তার আগে প্রথা মেনে হয় তোপধ্বনিও। রাজবাড়ির দুর্গোৎসবের সূচনায় রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু মানুষকেও। রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে দুর্গামণ্ডপের সামনে ভিড় করেন উভয় সম্প্রদায়ের ছোট-বড় অনেকেই।
বগড়ি রাজ ছত্রসিংহ মঙ্গলাপোতা রাজবাড়িতে দুর্গোৎসবের সূচনা করেছিলেন কয়েকশো বছর আগে। রাজ-রাজড়াদের রীতি মেনে এখনও সেই পুজো হয়। রাজ পরিবারের সদস্যরা জৌলুস কমলেও, পুজোর প্রথা আর ভাবগম্ভীর পরিবেশ এখনও অটুট। রাজাদের বীরত্বের প্রতীক হিসেবে চারটি তরবারিকে পুজো করা হয় দেবী দুর্গার সামনে রেখে। জিতাষ্টমীতে বেলবরণের সময় হয় একটি তরবারি পুজো। বাকি তিনটি তরবারি পুজো হয় মহালয়া, ষষ্ঠী ও সপ্তমীতে। এ দিন বিকেলে রাজবাড়ি প্রাঙ্গণে হয় তোপধ্বনি। সন্ধ্যায় রাজ পরিবারের কুলদেবতার মন্দিরের সামনে বেলবরণের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব সূচনা হয়। বেজে ওঠে ঢাক। পরিবারের রীতি মেনে হয় জীমূতবাহনের পুজো। বর্তমান ‘রাজা’ অরবিন্দ সিংহদেব-সহ রাজ পরিবারের সদস্যরা দেবী দুর্গার আবাহন করেন। রাজবাড়ির স্থায়ী দুর্গামণ্ডপে তৈরি হয় প্রতিমা। মঙ্গলাপোতা রাজ পরিবারের সদস্য তথা গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সমরজিৎ সিংহদেব বলেন, ‘‘রীতি মেনে জিতাষ্টমী থেকেই রাজবাড়ির দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। তোপধ্বনি সহযোগে বেলবরণের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। এ দিন জীমূতবাহনের পুজোও হয়েছে।’’
এ দিন রোদ উঠতেই হাসি ফুটেছে সর্বজনীন পুজো উদ্যোক্তাদের মুখেও। কোথাও বেড়েছে মণ্ডপ তৈরির ব্যস্ততা, কোথাও উদ্যোক্তারা পাড়ায় পাড়ায় বেরিয়ে পড়েছেন চাঁদা তুলতে। শুক্রবার দিনভর আকাশে ছিল মেঘ-রোদের লুকোচুরি। এ দিন দিনে বৃষ্টি হয়নি গড়বেতার তিনটি ব্লকে। বড় সর্বজনীন পুজো কমিটিগুলির মণ্ডপ বিশ্বকর্মা পুজোর সময় থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল। বাদ সেধেছিল টানা বৃষ্টি। নির্মীয়মান মণ্ডপে জল জমে যাওয়ায় কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অনেক পুজো কমিটির। মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল উদ্যোক্তাদের। শুক্রবারের রোদে হাসি ফুটেছে
তাঁদের মুখেও।