এগরার জামগাঁয় পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে বাজি তৈরির মশলা এবং অন্য সামগ্রী উদ্ধার হল। নিজস্ব চিত্র
বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে আট জনের মৃত্যুর রেশ এখনও কাটেনি। বৃহস্পতিবার রাতে মারা গিয়েছেন কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানুও। এর পরেই শুক্রবার খাদিকুলের বিস্ফোরণস্থল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে কামরাডিহার জামগা গ্রামে আরও একটি বেআইনি বাজি মজুত করার একটি ঘরের হদিশ পেল পুলিশ। তাদের দাবি, খাদিকুলের বেআইনি বাজি কারখানার সঙ্গে জামগার ওই মজুত স্থলের যোগসূত্র ছিল।
পুলিশ সূত্রের খবর, এগরা থানার থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে জামগা গ্রামে জঙ্গলের মধ্যে একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে বস্তা বস্তা বাজি তৈরির মশলার খোঁজ মেলে। অনুমান, খাদিকুলের ঘটনার পরে পুলিশের ধড়পাকড়ের ভয়ে বহু কারবারি নিজেদের বাড়িতে থাকা বাজি তৈরির মশলা অন্যত্র সরিয়ে রাখছিলেন। এমন এক কারবারি চৈতন্য মান্না জঙ্গলের মধ্যে ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে বাজি সরিয়ে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। তারা অবশ্য সপরিবারে বাড়িতে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। এ দিন সকালে গ্রামবাসীরা সন্দেহবশত ওই পরিত্যক্ত বাড়িতে তল্লাশি করতে প্রচুর পরিমাণে বাজি তৈরির মশলা মজুত রাখার বিষয়টি নজরে আসে। পরে এগরা থানার পুলিশ বাজি তৈরির মশলা ভর্তি আটটি বস্তা, একটি ড্রাম, দুটি পিচ বোর্ডের বাক্স উদ্ধার করেছে। চৈতন্য এক প্রতিবেশীর বাড়িতেও বেআইনি বাজি রেখেছিল বলে দাবি। জামগাঁর পরিত্যক্ত বাড়ির পাশাপাশি পুলিশ ওই প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে ও বাজির মশলা উদ্ধার করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কামরডিহা গ্রামের বাসিন্দা চৈতন্য এবং খাদিকুলের বেআইনি বাজি কারখানার মালিক মৃত ভানুর মধ্যে সখ্যতা ছিল। অনুষ্ঠানে আতসবাজির প্রতিযোগিতায় দু'জনে একে অপরকে টেক্কা দিতো। ভানুর মতোই কামারডিহা এলাকাতেও চৈতন্যের বাজির যথেষ্ট ‘সুখ্যাতি’ রয়েছে। খাদিকুলে বাজি বিস্ফোরণের পরেই চৈতন্য গা ঢাকা দিয়েছেন।
এদিকে, এ দিন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, অসিত মিত্র, দিব্যেন্দু মিত্রের ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল খাদিকুলের বিস্ফোরণ এলাকা পরিদর্শন করেন। মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেন। তাঁদের সব রকমের আইনি সহায়তার আশ্বাস দেন। আশুতোষ বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে অপরাধ সঙ্ঘটিত হয়েছে। সারা রাজ্যের মানুষ বারুদ মুক্ত বাংলা চাইছেন। অবিলম্বে রাজ্য এই সব কারখানা বন্ধ করতে হবে।’’ খাদিকুলে এখনও পুলিশের শিবির রয়েছে। তবে এ দিন নতুন করে ফরেনসিক এবং সিআইডি দলকে এলাকায় দেখা যায়নি। থমথমে রয়েছে গোটা গ্রাম। তবে সকালে ভানুর মৃত্যুর খবরে এলাকাবাসীর অনেকটাই ক্ষোভ প্রশমিত হয়েছে।