প্রতীকী ছবি।
দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কোনও যোগাযোগ ছিল না স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে। তবে শনিবারই বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি নিয়ে এসেছিল স্বামী। কিন্তু তারপরই, রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল এক মহিলার। ঘটনাটি ঘটেছে হলদিয়ার টাউনশিপ এলাকায়। ঘটনার জেরে সুশান্ত প্রধান নামে মহিলার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম নন্দিনী সামন্ত (২৪)। শনিবার রাতে বিষক্রিয়া জনিত কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই মহিলা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রবিবার সকালে সেখানেই তিনি মারা যান বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। ওই মহিলাকে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দিনীর বাড়ি হুগলির উত্তরপাড়ায়। হলদিয়ায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুশান্ত প্রধান নামে স্থানীয় এক যুবকের। সুশান্তর বাড়ি হলদিয়ার দুর্গাচকে বলে পুলিশ জানিয়েছে। কিন্তু টাউনশিপ এলাকায় সে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকত। সেখানে একটি মোবাইল দোকান রয়েছে তার।
২০১২ সালে সুশান্ত ও নন্দিনীর বিয়ে হয়েছিল। তাদের একটি দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে। কিন্তু, ইদানীং হলদিয়াতে থাকতেন না নন্দিনী। তাঁর বাবা অরুণ সামন্ত বলেন,‘‘বছর দেড়েক ধরে আমাদের এখানেই থাকত নন্দিনী। শনিবার কলকাতায় এসেছিল জামাই। ফোন করে সেখানে ডেকেছিল মেয়েকে। এরপর দু’জন হলদিয়ায় চলে যায়। তারপর রবিবার সকালে খবর পাই মেয়ে তমলুক হাসপাতালে মারা গিয়েছে। ’’
অরুণবাবুর অভিযোগ, মেয়ে ও নাতির খরচ দিতে পারত না জামাই। এ নিয়ে মেয়ের সঙ্গে কয়েক বার ঝগড়াঝাঁটিও হয়েছে। মেয়েকে তাই পরিকল্পিতভাবে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যে নাগাদ অরুণবাবু হলদিয়া থানায় গিয়ে মেয়েকে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে সুশান্তকে তমলুক থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে হলদিয়া থানার পুলিশ। সুশান্তের বাবা এবং মায়ের বিরুদ্ধেও খুনের অভিযোগ জানানো হয়েছে।
হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়ের বাড়ির অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।