Hul Diwas

Hul Diwas: হুল দিবসে দ্বন্দ্বই কাঁটা শুভেন্দুর সভায়

হিসেব মতো পঞ্চায়েত ভোটের বাকি এগারো মাস। এদিকে জেলা বিজেপির অন্দরেও বইছে ক্ষোভের চোরাস্রোত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২২ ০৮:০৯
Share:

হুল দিবসের প্রস্তুতি। মেদিনীপুর শহর লাগোয়া কেরানিচটিতে। নিজস্ব চিত্র

৩০ জুন, বৃহস্পতিবার হুল দিবসে জেলা বিজেপির ডাকে বেলপাহাড়িতে সভা করবেন শুভেন্দু অধিকারী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে জঙ্গলমহলে আদিবাসী আবেগকে সামনে রেখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার জেলা বিজেপির ঘর কি গোছাতে পারবেন শুভেন্দু? দলের অন্দরে এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে।

Advertisement

হিসেব মতো পঞ্চায়েত ভোটের বাকি এগারো মাস। এদিকে জেলা বিজেপির অন্দরেও বইছে ক্ষোভের চোরাস্রোত। জেলা সভাপতি তুফান মাহাতোর বিরাগভাজন হয়ে ইতিমধ্যেই গত মার্চে ঝাড়গ্রাম জেলায় দলের চার নেতা বহিষ্কৃত হয়েছেন। সম্প্রতি তাঁদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে গিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র ভারতী ঘোষ। আবার বহিষ্কৃত নেতাদের দলে ফেরাতে দলের অন্দরে সওয়াল করে চলেছেন সাংসদ কুনার হেমব্রম ও প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্য কমিটির বর্তমান সদস্য সুখময় শতপথী। প্রাক্তন জেলা সভাপতি সুখময় শতপথীর অনুগামীরাও দলে কোণঠাসা। দিনকয়েক আগে জেলা যুবমোর্চার সভাপতির পদ থেকে চন্দনেশ্বর সেনগুপ্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে চন্দনেশ্বরকে তমলুক সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার ‘ইনচার্জ’ করা হয়েছে। সূত্রের খবর, বহিষ্কৃত বিজেপি নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এমন সন্দেহে চন্দনেশ্বরকে জেলা যুব মোর্চার সভাপতির পদ খোয়াতে হয়েছে। জেলার রাজনীতি থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুখময় জেলা সভাপতি থাকাকালীন ২০২০ সালের ২৮ অগস্ট জেলা যুবমোর্চার সভাপতি হন ঝাড়গ্রাম আদালতের তরুণ আইনজীবী চন্দনেশ্বর।

গত বিধানসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে দলের প্রার্থী হন সুখময় শতপথী। সেই কারণে জেলা সভাপতির পদ থেকে সুখময়কে সরতে হয়। গত বছর মার্চে জেলা সভাপতির দায়িত্ব পান তুফান মাহাতো। সঙ্ঘের প্রাক্তন প্রচারক তথা জেলা বিজেপির প্রাক্তন সম্পাদক ‘মিতভাষী’ তুফানকে মেনে নিতে পারেননি গেরুয়া শিবিরের একাংশ। বিধানসভা ভোটে জেলায় দলের ভরাডুবির পরে আক্রান্ত গেরুয়া শিবিরের কর্মীদের পাশে তুফান দাঁড়াননি বলে সরব হন বিজেপির একাংশ। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি তুফান নয়া জেলা কমিটি ঘোষণা করলে তাতে জেলা কমিটিতে তুফানের ঘনিষ্ঠজনরা রয়েছেন অভিযোগ তুলে তুফানকে হেনস্থা করে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন বিজেপির একাংশ। ওই ঘটনার নেতৃত্বে থাকা চার নেতা পালহান সরেন, সুমন্ত মহান্তি, সত্য মল্লিক ও বাপ্পা বসাককে গত মার্চে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরই জেলার গেরুয়া শিবিরের অন্তর্দ্বন্দ্ব বারে বারেই প্রকট হয়েছে।

Advertisement

শুভেন্দুর সভায় লোক ভরানোর জন্য অবশ্য জেলার ১৮টি মণ্ডলের মধ্যে মাত্র চারটি মণ্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে বহিষ্কৃত বিক্ষুব্ধরাও দলের সভায় লোকজনের যাত্রাভঙ্গ করতে আসরে নেমে পড়েছেন বলে খবর। এমনকি শুভেন্দুর সভার দিনেও একাধিক জায়গায় বিক্ষুব্ধরা হুলদিবস পালন করে লোকজন টানার চেষ্টা করতে পারেন বলেও জানা গিয়েছে। তুফান অবশ্য ইদানিং নিজেকে সংবাদমাধ্যম থেকে দুরে রাখছেন। যদিও জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডু বলছেন, ‘‘পবিত্র হুল দিবসে শুভেন্দুদা বেলপাহাড়ির ইঁদকুড়ি মাঠে আয়োজিত সভায় আসবেন। সভায় বিশিষ্টজনদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। দলের উদ্যোগে হলেও এটা কোনও রাজনৈতিক সভা নয়। আদিবাসী মানুষজনকে নিয়ে বীর শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান। তাই বিনপুর বিধানসভার চারটি মণ্ডল থেকেই লোকজন আসবেন। অন্য মণ্ডল থেকে যাবেন না।’’ বিক্ষুব্ধদের বাগড়া দেওয়ার প্রসঙ্গে জেলা সহ সভাপতির দাবি, ‘‘দলে যাঁরা নেই, তাঁদের কোনও গুরুত্বও নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement