প্রতীকী ছবি।
ডিজিটাল রেশন কার্ড কোনও পরিচয়পত্র নয়। এই কার্ডের সঙ্গে এনআরসি-র কোনও যোগ নেই। প্রশাসন এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে। হচ্ছে প্রচারও। তবু ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য ঢালাও আবেদন জমা পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। আবেদনের সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। দু’দফায় বিশেষ শিবির হয়েছে। জেলার সেই শিবিরগুলিতেই ওই সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। এনআরসি আতঙ্কের আবহেই এত বিপুল সংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন মহল।
জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি মানছেন, ‘‘বিশেষ শিবিরে ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য প্রচুর আবেদন জমা পড়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘এনআরসি-র সঙ্গে ডিজিটাল রেশন কার্ডের কোনও সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রীও স্পষ্ট বলেছেন, এ রাজ্যে এআরসি হতে দেবেন না। তারপরও অনেকের ভয় কাটছে না।’’ জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, আবেদন এসেছে সবমিলিয়ে ৩,৪৬,৫২০টি। এরমধ্যে প্রথম পর্যায়ে ২,৭৪,৩৫১টি। দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭২,১৬৯টি। কেশপুর, গড়বেতা, সবং, পিংলা, কেশিয়াড়ি, মেদিনীপুর, দাঁতন প্রভৃতি এলাকায় বেশি আবেদন জমা পড়েছে।
খাদ্যসাথী প্রকল্পের জন্য নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ড তৈরি করেছে খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। বিশেষ শিবিরে নতুন ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে। যে সব ডিজিটাল রেশন কার্ডে ভুল রয়ে গিয়েছে, সেগুলির সংশোধনের আবেদনপত্রও একই সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, শিবিরগুলিতে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যসামগ্রী প্রাপকের তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য যেমন আবেদন এসেছে, তেমন পরিবারের নতুন সদস্য সংযোজন, নাম বা ঠিকানার ভুল সংশোধন, ডিলার পরিবর্তন প্রভৃতি ক্ষেত্রেও আবেদন এসেছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘কয়েকটি এলাকায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের জন্য আবেদনের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল।’’ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবারগুলিকে এক ধরনের নতুন রেশন কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অনেকে সরকারি মূল্যে খাদ্যসামগ্রী না চাইলেও ডিজিটাল রেশন কার্ড চান। তাঁদের জন্যই নতুন এক ধরনের ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হচ্ছে। অমূল্যও বলেন, ‘‘ডিজিটাল রেশন কার্ডের সুবিধা থেকে কোনও গ্রাহক বাদ যাবেন না।’’
জেলা খাদ্য দফতরের এক সূত্রের অবশ্য দাবি, এই বিশাল সংখ্যক ডিজিটাল রেশন কার্ডের আবেদনের কাজ দ্রুত শেষ হবে। সেই পদক্ষেপ হচ্ছে।