প্রতীকী ছবি।
তেলের ট্যাঙ্কের ভালভ মেরামত করতে গিয়ে বিপত্তি। তাতেই বেরিয়ে গেল ১২ হাজার লিটার পেট্রল। অল্পের জন্য বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রেহাই পেল হলদিয়ার হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড।
কারখানা সূত্রের খবর, রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ ওই কারখানার হলদিয়া টার্মিনালের স্টোরেজ ট্যাঙ্কের একটি ভালভ মেরামত করা হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় রক্ষণাবেক্ষণগত ত্রুটি দেখা গিয়েছিল। একটি ভালভ খুলে সারাতে যেতেই অন্য ভালভ থেকে মজুত পেট্রল বেরোতে থাকে। সেই পেট্রোল গিয়ে পড়ে ‘ডাইক ওয়াল চৌবাচ্চা’র মধ্যে। দ্রুত ফোম দিয়ে ওই চৌবাচ্চা ঢেকে দেওয়া হলেও ততক্ষণে বেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ১২ হাজার লিটার পেট্রল।
কারখানার তরফে জানা গিয়েছে, পেট্রলিয়াম যাতে বাতাসের সঙ্গে মিশে আগুন না লাগতে পারে, সেই জন্য ফোম দিয়ে বায়ুস্তর এবং পেট্রোলের মাঝে একটি আস্তরণ তৈরি করতে হয়। আস্তরণ তৈরি করলে পেট্রল বাতাসের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। ওই কাজের জন্য হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড এবং হলদিয়া রিফাইনারি থেকে ফোম বোঝাই গাড়ি এনেছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। আপাতত, পড়ে যাওয়া পেট্রল অন্য একটি ট্যাঙ্কে রাখা হয়েছে। সেটির ফের শোধন করা হবে।
রবিবার পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে রাত ৮টা বেজে যায়। ঘটনা খবর পাওয়ার পরই সোমবার কারখানা পরিদর্শনে যান হলদিয়ার কারখানা পরিদর্শক। কারখানা পরিদর্শক বিভাগ সূত্রের খবর, রক্ষণাবেক্ষণের পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে ওই কারখানায়। আশেপাশের একাধিক সংস্থা অতিদাহ্য পদার্থ নিয়ে কাজ করে। সেক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষের এই অবহেলায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে পারত। বায়ুস্তরের সঙ্গে পেট্রল মিশে গেলে দূষণের পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যেত।
দ্রুত ত্রুটি না শোধরালে বা ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটলে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে বলে একটি চিঠি দিয়েছে কারখানা পরিদর্শকের দফতর। হলদিয়ার কারখানা পরিদর্শক দেবায়ন দে বলেন, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। আর একটু হলেই বড় বিপদ ঘটতে পারত। বলতে পারেন কানের পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে গেছে। সংস্থাকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে, ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা ঘটলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
প্রশ্ন উঠছে, এইচপিএল-এ কয়েক মাস আগেই বড়সড় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন কয়েকজন কর্মী আধিকারিক। তা থেকেও কি শিক্ষা নেয়নি এইচপিসিএল? এ ব্যাপারে জানতে ফোন করা হয় সংস্থার হলদিয়া টার্মিনালের আধিকারিক জে ডি পাধিকে। তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে ব্যস্ত। কলকাতা অফিসের সঙ্গে কথা বলুন।’’