লক্ষ্মীপুজোর আগে বিকোচ্ছে সন্দেশ, মেদিনীপুরের পঞ্চুরচকে। নিজস্ব চিত্র
দাম চড়া। ফর্দে কাটছাঁট করেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর বাজার সারছে মধ্যবিত্ত। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম— দুই জেলাতেই একই ছবি।
আজ, রবিবার পুজো। তার আগে শনিবার মেদিনীপুর শহরের বাজারে ফল কিনতে এসেছিলেন মানসী গিরি। তিনি বললেন, ‘‘ফলের দাম এতটা বেড়ে যাবে ভাবিনি।’’ ঝাড়গ্রামের বাজারে দাঁড়িয়ে কণিকা মজুমদারের গলাতেও আক্ষেপের সুর। তাঁর কথায়, ‘‘ফলের দাম আগুন, তাই কম করেই বাজার করছি।’’ চন্দ্রকোনা রোডে বাসস্ট্যান্ডের সামনে ফল দোকানের সামনে হাতে ফর্দ নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন শুভাশিস চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘দাম বেড়ে যাওয়ায় স্ত্রীর লিখে দেওয়া ফর্দ থেকে কিছু কাটছাঁট করতেই হচ্ছে, না হলে টাকায় কুলোতে পারব না।’’
এটা যদি হয় ক্রেতাদের হা হুতাশ তবে তার উল্টো দিকে তৃপ্তির রেশও আছে। বেলদার এক ব্যবসায়ী জানালেন, এবার বাজার ভাল। প্রতিমা ভালই বিক্রি হচ্ছে। মনে হচ্ছে লক্ষ্মীলাভ ভালই হবে। ঝাড়গ্রামের ফল ব্যবসায়ী শম্ভুনাথ কর মানছেন, ‘‘লেবুর দাম অনেকটা বেড়েছে, বাকি ফলেরও এবার দাম অনেকটা বেশি।’’ মেদিনীপুর শহরের ফল বিক্রেতা দীপক শঙ্করের কথায়, ‘‘পাইকারি বাজারেই তো দাম চড়া থাকে।’’
দুই জেলার বড় বাজারগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিনের তুলনায় লক্ষ্মীপুজোর আগে আগে ফল থেকে ফুল, প্রতিমা, আনাজপাতি - সবেরই দাম বেড়েছে। মেদিনীপুর শহরে এদিন সাধারণ আপেল কিলো প্রতি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ঘাটালে আপেলের দাম আরও বেশি ছিল। এক ডজন কলার দাম ছিল মেদিনীপুর ও খড়্গপুরে ৬০-৭০ টাকা, ঘাটালে ৭০-৮০ টাকা, ঝাড়গ্রামে ৫০-৬০ টাকা। ঝাড়গ্রামে আঙুরের কিলো ছিল ২০০-৪০০ টাকা। এই ফলের দাম মেদিনীপুর, খড়্গপুর বা ঘাটালে অবশ্য অতটা ছিল না। নারকেল, ডাব, ন্যাসপাতি, কমলালেবু, বেদানার মতো ফলের দামে দুই জেলায় সামান্যই তফাৎ ছিল। দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল আনাজেরও। বেগুন, বাঁধাকপি, টমেটোর দাম কিলোতে ১০-১৫ টাকা করে চড়েছে দুই জেলাতেই। দাম বেড়েছে লক্ষ্মী প্রতিমারও। ছাঁচের প্রতিমার দামও চড়া। মেদিনীপুরে একেবারে ছোট মাপের প্রতিমা বিক্রি হয়েছে ১৮০-২০০ টাকায়। সামান্য বড় হলে ৩০০-৪০০ টাকা।
লক্ষ্মীলাভের আশায় কপালে ভাঁজ নিয়েই অবশ্য বাজারমুখো হচ্ছেন দুই জেলার বহু গৃহস্থ। ফর্দে কাটছাঁট করেও পুজোর আয়োজন করতে হবে নাকি!