দাবি: মেদিনীপুর মেডিক্যালে নার্সদের অবস্থান। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসার গাফিলতিতে নার্সের মৃত্যুর অভিযোগে মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষকে বুধবার রাতভর ঘেরাও করে রেখেছিল নার্সেরা। শুক্রবারও অধ্যক্ষের দফতরের সামনে অবস্থান চালিয়ে যান তাঁরা। নার্স মৃত্যুর তদন্তে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল। মৃতার পরিজন ও নার্সদের সঙ্গে কথাও বলেন দলের প্রতিনিধিরা।
স্বাস্থ্য দফতরের দলে ছিলেন দফতরের স্পেশাল সেক্রেটারি তমালকান্তি ঘোষ, ডেপুটি ডিরেক্টর মিনাক্ষ্মী দাস পাল প্রমুখ। নার্সদের একটি দলও এ দিন রাজ্যের ওই দলের সঙ্গে দেখা করে। তাঁরা দাবি জানায়, চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল। না হলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটত না। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “রাজ্য থেকে একটি দল এসেছিল। সব খতিয়ে দেখেছে। কিছু কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়েছিল। আমরা তা দেখিয়েছি।”
অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সাসপেন্ড করার দাবিতে এ দিনও সরব হয়েছে নার্সের ইউনিটি। নার্সেস ইউনিটির রাজ্য সম্পাদিকা পার্বতী পালের কথায়, “আমরা নির্দিষ্ট দাবি জানিয়েছি। শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করছি।” তিনি বলেন, “অবিলম্বে অভিযুক্ত চিকিৎসকদের সাসপেন্ড করা উচিত।” শুক্রবার দুপুরে মেডিক্যালের তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠন বিক্ষোভ দেখায়। মেডিক্যাল কলেজের সামনে এই বিক্ষোভ হয়। সংগঠনের দাবি, নার্সদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। কেউ কেউ ভুল বুঝিয়ে তাঁদেরকে দিয়ে আন্দোলন করাচ্ছে। নার্সদের আন্দোলনের ফলে পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
ওই কর্মচারী সংগঠনের জেলা আহ্বায়ক অরুণ প্রতিহার বলেন, “আমরাও নার্সের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত দাবি করছি। তবে পরিষেবা ব্যাহত না করে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক। কেউ কেউ নার্সদের ভুল বোঝাচ্ছেন। এটা অনুচিত।” নার্সের ইউনিটির পক্ষে সঞ্চিতা সূত্রধরের দাবি, “পরিষেবা ব্যাহত হয়নি। হওয়ার প্রশ্নও নেই।” তাঁর কথায়, “আমরা কর্মবিরতির ডাক দিইনি। সমস্ত পরিষেবা চালু রেখেই এই আন্দোলন হচ্ছে।”
গত মঙ্গলবার তৃপ্তি দিণ্ডা নামে এক নার্সের মৃত্যু হয়। তৃপ্তিদেবী মেডিক্যালেই কর্মরত ছিলেন। মৃতার পরিজনেদের অভিযোগ, হাসপাতালে তৃপ্তিদেবীর চিকিৎসাই হয়নি। ক্ষুব্ধ নার্সরা অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বুধবার মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চাননবাবুকে ঘেরাও করেন। ওই দিন রাতভর ঘেরাও হয়ে থাকেন অধ্যক্ষ। বৃহস্পতিবার ঘেরাও ওঠে। এরপর থেকে অবস্থান শুরু করেছেন নার্সরা। নার্সিং সুপারের দফতরের সামনে অবস্থান চলছে। মেডিক্যালের অধ্যক্ষের দফতরের সামনেও অবস্থান চলছে।