বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে ঘাটালে। শনিবার থেকে ঘাটাল শহর-সহ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় জল কমছে। ঘাটালের মহকুমাশাসক পিনাকিরঞ্জন প্রধান বলেন, “নতুন করে আর বৃষ্টি না হলে চলতি সপ্তাহেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
গত কয়েকদিনের বৃষ্টি ও কংসাবতী জলাধারের ছাড়ার জলে ঘাটাল শহর-সহ মহকুমার তিনটি ব্লকের শতাধিক গ্রাম জলমগ্ন হয়। একরের পর একর জমির ফসলও চলে যায় জলের দখলে। প্রশাসন ও কৃষি দফতর সূত্রের খবর, এ বার খরিফ মরসুমে বৃষ্টির অভাবে জেলার চাষিরা সময়ের অনেক পরে ধান লাগিয়েছিলেন। কিন্তু গত মাসের শেষ সপ্তাহে আচমকা টানা বৃষ্টি ও জল ছাড়ার ফলে প্লাবিত হয়ে পড়ে ঘাটালের বহু এলাকা। ফলে চাষে ক্ষতি হয়েছে অনেকটাই। চলতি বন্যায় ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লক এবং দাঁতন ব্লক নিয়ে ১৯৬টি মৌজা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দফতরের সহ কৃষি-অধিকর্তা (শস্য সুরক্ষা) শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, “এখনও পর্যন্ত চার হাজার হেক্টর জমির ধান এবং এক হাজার হেক্টর বীজতলা নষ্ট হয়েছে। ক্ষতির বহর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
সব্জি চাষেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দফতরের আধিকারিক কুশধ্বজ বাগ বলেন, “গত বন্যায় তিন হাজার হেক্টরের বেশি সব্জি নষ্ট হয়েছিল। ফের অতিবৃষ্টিতে নানা এলাকা থেকে সব্জি চাষের ক্ষতির খবর আসছে।’’
ঘাটাল ব্লকের দেওয়ানচকের চাষি তারাপদ সাঁতরা, অজবনগরের গৌতম কোটাল বলেন, “গত বন্যায় আমাদের তিন বিঘা জমির ধান পুরো পচে গিয়েছিল। জল কমায় চড়া দামে বীজতলা কিনে ফের চাষ করেছিলাম। কিন্তু ফের জমিতে জল জমেছে। কী করব বুঝতে পারছি না।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সেচ ও কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষেরও বক্তব্য, “জেলার কিছু ব্লকে ধান এবং সব্জি চাষে ক্ষতি হয়েছে। দফতরের মন্ত্রীকে জানিয়েছি। যাতে মরসুমি সব্জি চাষ করেও অন্তত ক্ষতির খরচ উঠে যায়, সেই চিন্তাভাবনা করছি।”