হলদিয়া পেট্রোকেম। —ফাইল চিত্র।
বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাজ্যে বড়সড় লগ্নি করছে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড। দেশের সর্ববৃহৎ প্রোপিলিন এবং ফেনল উৎপাদন প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে সংস্থাটি। এর ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের শিল্পনগরীতে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে বিপুল কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন হলদিয়া পেট্রোকেমের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার নভনীত নারায়ণ। তিনি বলেন, ‘‘২০২৬ সালের গোড়াতেই এই প্রকল্পটি শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এর ফলে পূর্ব ভারতে পলিমার প্রসেসিং সেক্টরে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ আসছে।’’ সংস্থার সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে দেশজুড়ে প্রোপিলিন এবং ফেনলের মতো রাসায়নিকের বিপুল চাহিদা। সেই কথা মাথায় রেখে রাসায়নিক উৎপাদনে দেশের সেরা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এগোচ্ছে হলদিয়া পেট্রোকেম। ওলেফিন রূপান্তর প্রযুক্তি (ওসিটি)-র ব্যবহারের মাধ্যমে তারা তাদের সর্ববৃহৎ রাসায়নিক উৎপাদন কারখানাটি তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে হলদিয়াতেই।
উল্লেখ্য, চলতি আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত শুধু রাসায়ানিক বিক্রি করেই ৯৯৯ কোটি টাকা আয় করেছে হলদিয়া পেট্রোকেম। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে বিনিয়োগের ফলে বছরে ৩০০ কিলোটন ফেনল এবং ১৮৫ কিলোটন এসিটোন উৎপাদন করতে সক্ষম হবে তারা। নভনীত জানান, এই প্রকল্প রূপায়ণের ফলে হলদিয়া পেট্রোকেমের রাসায়নিক ব্যবসার অঙ্ক প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ছুঁয়ে ফেলবে। তাঁর দাবি, রাসায়নিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে হলদিয়ায় এই বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ গত দুই দশকে ভারতে সর্ববৃহৎ লগ্নি। আর এই বিনিয়োগের ফলে আগামী দিনে বিভিন্ন আনুষঙ্গিক কারখানাও গড়ে উঠবে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ পেট্রোকেমিক্যালস সংস্থা হলদিয়া পেট্রোকেম ২০১৪ সালে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও পরে চ্যাটার্জি গ্রুপের মালিকানা এবং পরিচালনায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায় এই সংস্থা। হলদিয়া পেট্রোকেম এই মুহূর্তে বছরে প্রায় ৭ লক্ষ টন এথিলিন উৎপাদন করে। পেট্রোকেমিক্যালের উৎপাদনে গতি আসায় কেবল মাত্র পূর্ব ভারতে পলিমার উৎপাদন ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ এই সংস্থা এনে দিয়েছে বলে বণিক মহলের মত। নারায়ণ জানান, পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটালাইজ়েশনের মতো ক্ষেত্রে বিপুল অগ্রগতি হবে। তাঁর কথায়, ‘‘রাসায়নিকের উপর নির্ভরশীল শিল্পকারখানার সার্বিক পরিস্থিতি খুব অল্প সময়ের মধ্যে অসাধারণ বৃদ্ধির সাক্ষী হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’’