মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুর দাবিতে মিছিল, ঘাটালে। নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় মোদী সরকারের প্রথম বাজেটের আগেই প্রস্তাবিত ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে টাকা বরাদ্দের দাবি জানিয়ে সরব হয়েছিল ‘মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটি’। কিন্তু বাজেটে কোনও অর্থ বরাদ্দ হয়নি। প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ঘাটালের বরদা চৌকান থেকে কলেজ মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করল কমিটি। পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ডে বাজেটের প্রতিলিপি পুড়িয়ে বিক্ষোভও দেখানো হল।
এ দিনের কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন কমিটির কাযর্করী সভাপতি সত্যসাধন চক্রবর্তী, যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়েক ও দেবাশিস মাইতি। ছিলেন অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা বন্যা-ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির পঞ্চানন প্রধান, বন্দর ব্রিজ নির্মাণ সংগ্রাম কমিটির সভাপতি বলাইচন্দ্র পাড়ুই, সাহেবঘাট ব্রিজ নির্মাণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কানাইলাল পাখিরা, কৃষক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি গোপাল সামন্ত, ঘাটাল-রানিচক নদীবাঁধ রক্ষা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রসেনজিৎ কাপাস ও অর্ধেন্দু মাজী প্রমুখ। বিক্ষোভ সভায় বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গৌরিশঙ্কর বাগ, বিদ্যাসাগর গবেষক হরগোবিন্দ দোলই প্রমুখ। শতাধিক মানুষ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
দীর্ঘ প্রায় চার দশক ধরে ঘাটালের এই প্রস্তাবিত প্রকল্প রূপায়ণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে সংগঠনটি। তাছাড়াও বিভিন্ন নদীবাঁধ মেরামতি, নদীর উপর সাঁকো বা সেতু নির্মাণ-সহ নানা দাবিতে সরব হয় তারা। কেন্দ্রীয় বাজেটে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে অর্থ বরাদ্দের দাবিতে গত ২৭ জুন সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ও কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর কাছে সংগঠনের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২৩ জুলাই কেন্দ্রীয় বাজেটে অর্থমন্ত্রী ওই প্রকল্পের জন্য একটি শব্দও খরচ করেনি। ফলে দুই মেদিনীপুরের ২০ লক্ষাধিক বানভাসি মানুষ হতাশ। তৈরি হয়েছে ক্ষোভও।
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রূপায়ণ সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র নায়ক ও দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘দুই মেদিনীপুরের ১৩টি ব্লকে স্থায়ী বন্যা নিয়ন্ত্রণে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার নানা অজুহাতে টালবাহানা করে এখনও অর্থ বরাদ্দ করেনি। দুই জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রত্যেক বছর বর্ষার সময় সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।’’ অবশ্য লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, কেন্দ্র টাকা না দিলে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান রাজ্য সরকার একাই রূপায়ণ করবে।ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে পদক্ষেপও শুরু হয়েছে বলে খবর।
লোকসভা ভোটের প্রচারে মাস্টার প্ল্যানে টাকা বরাদ্দ নিয়ে প্রতিশ্রুতির কথা শুনিয়েছিলেন বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরাও। ফলে, বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হওয়ার আশায় ছিলেন সংশ্লিষ্ট সকলেই। কিন্তু তাঁরা আশাহত হয়েছেন।