এত্তা জঞ্জাল!

জেলার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল। যদিও হাসপাতাল চত্বরে চারিদিকে ছড়িয়ে থাকে আবর্জনা। নিয়মিত ভ্যাট পরিষ্কার না হওয়ায় দুর্গন্ধে টেকা দায়। হাসপাতালে ‘দুরবস্থার’ খোঁজ নিল আনন্দবাজার।মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বরে ইতিউতি ছড়িয়ে থাকে জঞ্জাল। বাদ নেই দাহ্য পদার্থও। যদিও হাসপাতাল চত্বর সাফাই করবে কে, তা নিয়ে পুরসভা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আকচাআকচিতেই বাড়ছে সমস্যা। দায় ঠেলাঠেলির জেরে ভুগছেন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৬ ০০:৩৪
Share:

স্তূপাকার আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে দূষণ।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল চত্বরে ইতিউতি ছড়িয়ে থাকে জঞ্জাল। বাদ নেই দাহ্য পদার্থও। যদিও হাসপাতাল চত্বর সাফাই করবে কে, তা নিয়ে পুরসভা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আকচাআকচিতেই বাড়ছে সমস্যা। দায় ঠেলাঠেলির জেরে ভুগছেন রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।

Advertisement

হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পুরসভাকে একাধিকবার নিয়মিত সাফাইয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে। তাতে কাজ হয়নি। অন্য দিকে, পুর- কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিয়মিত হাসপাতাল চত্বর সাফাই করা হয়। আবর্জনা পরিষ্কারের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও নিতে হবে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি পুর- দফতর এক নির্দেশিকা জারি করেছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পুর-এলাকার হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব পুরসভারই। এরপরও অবশ্য মেদিনীপুর মেডিক্যালের ছবিটা বদলায়নি!

হাসপাতাল সুপার তন্ময় পাঁজা বলেন, “হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার রাখার বিষয়টি পুরসভাকে আগেও বলা হয়েছে। বিষয়টি দেখছি!” হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার রাখার গুরুত্বই বুঝতে পারছে না পুরসভা! এখানে কত মানুষ আসেন। হাসপাতাল চত্বরের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখা জরুরি।” কেন এখানে নিয়মিত সাফাই হয় না? মেদিনীপুর পুরসভার উপ পুরপ্রধান জিতেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “প্রায়ই সাফাই হয়। অনেক বড় জায়গা। তাই হয়তো সব দিন সব জায়গা পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না! তবে হাসপাতালকেও এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে!”

Advertisement

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে। — সৌমেশ্বর মণ্ডল।

মেদিনীপুর মেডিক্যালে এখন ৬৬০টি শয্যা রয়েছে। গড়ে রোগী ভর্তি থাকেন ৭৫০-৮০০ জন। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, মাসে বহির্বিভাগে রোগী আসেন গড়ে প্রায় ১৬ হাজার। অর্থাৎ, দিনপিছু গড়ে ৫৩০ জন। জরুরি বিভাগে মাসপিছু গড়ে সাড়ে ৬ হাজার রোগী আসেন। হাসপাতালে ব্যবহৃত নানা চিকিৎসার সরঞ্জাম, সিরিঞ্জ, স্যালাইনের বোতলও পড়ে থাকে বলে অভিযোগ। আবর্জনার মধ্যে পড়ে থাকে দাহ্যবস্তুও। ইতিউতি পড়ে থাকা দাহ্যবস্তুতে যে কোনও সময় আগুন লেগে যেতে পারে বলেও অভিযোগ। যদিও হুঁশ নেই কারও।

দীপালি রুইদাস, মানিক দাসের মতো রোগীর পরিজনদের বক্তব্য, হাসপাতালের চারপাশে জঞ্জাল পড়ে থাকে। নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। এত দাহ্যবস্তু জমে থাকলে যে কোনও সময় আগুন লাগার সম্ভাবনা থেকেই যায়। দীপালির কথায়, “মেদিনীপুরের মতো এত বড় হাসপাতালে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ভাবাই যায় না!” মানিকের কথায়, “রোগীদের স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে কর্তৃপক্ষের তো নজরই নেই! চারিদিকে এত দাহ্যবস্তু। যে কোনও সময় এখানে আগুন লাগতে পারে। এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে কেউ অসুস্থও হয়ে যেতে পারে।”

সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বদল হয়েছে। আগে সমিতির চেয়ারম্যান ছিলেন বিধায়ক মৃগেন মাইতি। নতুন চেয়ারম্যান হয়েছেন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, শীঘ্রই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হবে। সেখানে হাসপাতাল চত্বর সাফাইয়ের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।

আদতে হাসপাতাল চত্বর কবে পরিষ্কার হয়, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement