খেজুরির কটকা দেবীচক এবং গোড়াহার জলপাই গ্রামে পুলিশের টহল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
সংঘর্যের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবারেও থমথমে খেজুরির কটকা দেবীচক, গোড়াহার জলপাইয়ের মতো একাধিক গ্রাম। রবিবার তৃণমূল এবং বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনায় দু’দলেরই অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিন চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য। সংঘর্ষে গুরুতর জখম বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সম্পাদক পবিত্র দাসকে এ দিন কলকাতায় স্থানান্তরিত করেন তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
কাঁথির এসডিপিও অভিষেক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। আপাতত এলাকায় পুলিশের টহল চলবে।’’
আমপানে ভেঙে পড়া গাছ বিক্রি করা নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়ায়। এদিন সকালে জখম বিজেপি নেতা পবিত্র দাসের শরীরে গুলি না বোমার সপ্লিন্টারের আঘাত লেগেছে তা জানার জন্য এমআরআই পরীক্ষা করা হয় বলে দলের জেলা নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে। পবিত্র শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও, অস্ত্রোপচারের জন্য এদিন দুপুর নাগাদ তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয় বলে তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
রবিবারের ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ ৬ জন তৃণমূল কর্মীর বাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে এ দিন দু’জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি বিজেপি নেতা পবিত্র দাসকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে শাসক দলের দুই কর্মীকেও গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের এ দিন কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। এদিনও গোড়হার জলপাই, কটকা দেবীচক গ্রামে পুলিশকে পিকেটিং, রুটমার্চ এবং মোটর বাইকে চেপে টহল দিতে দেখা গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। যদিও এলাকায় তাঁদের দলের কর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি সুদর্শন জানা। স্থানীয় বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল বলেন, ‘‘অন্যান্য এলাকা থেকে বিজেপি লোক এনে আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করছে বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ পদক্ষেপ করতে বলেছি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পবিত্রকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তৃণমূলের এমন বর্বরোচিত ঘটনা গোটা রাজ্যবাসী জেনে গিয়েছে। তাই সমতা বজায় রাখতে পুলিশ দু’পক্ষের সমান সংখ্যক কর্মীদের গ্রেফতার করেছে। এলাকা থেকে পুলিশ চলে গেলে শাসক দল ফের অশান্তি করতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা করছি।’’