মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অরণ্যশহরের হারানো সবুজ ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে বন দফতর। এ ব্যাপারে পুরসভা ও পূর্ত দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে ঝাড়গ্রাম বন বিভাগ। শুক্রবার বনমহোৎসব উপলক্ষে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “ঝাড়গ্রামের হারানো সবুজ ফেরাতে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি তৈরি করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী চান ঝাড়গ্রামকে সামনে রেখে সবুজ বাংলা গড়ে উঠুক।” বন দফতর সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে শহরে এক হাজার শাল গাছ লাগানো হবে। এ ছাড়া ছায়া দেয় এমন গাছও লাগানো হবে।
ঝাড়গ্রাম শহরের মূল সৌন্দর্য রাস্তার দু’পাশের অগুনতি শালগাছ। যা বর্তমানে অনেক কমে গিয়েছে। শহরের যে সব এলাকায় আগে ঘন শালগাছ ছিল, সে সব এখন ইতিহাস। পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৮ সালে ২১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ঝাড়গ্রামে বনাঞ্চলের পরিমাণ ছিল ৮ বর্গ কিলোমিটার। ২০০৬ সালে তৎকালীন বাম পুরবোর্ড এক বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমীক্ষা করায়। ওই সমীক্ষা রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৬ সালে অরণ্যশহরে সব মিলিয়ে সবুজের পরিধি ছিল মাত্র ৩ বর্গ কিলোমিটার। তারপর আর সমীক্ষা করা হয়নি।
ঝাড়গ্রামের পরিবেশ কর্মী মৃণ্ময় সিংহের দাবি, গত পাঁচ বছরে উন্নয়নের দোহাই দিয়ে যে হারে শহরে শালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে এবং কৌশলে মেরে ফেলা হয়েছে, তাতে সবুজের পরিমাণ আরও কমে গিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯২২ সালে ঝাড়গ্রাম মহকুমাসদর গঠিত হয়। তখন ঘন শালজঙ্গল কেটেই তৈরি হয়েছিল মহকুমাশাসকের দফতর। তা সত্ত্বেও রাস্তার দু’ধারে ঘন শাল গাছের সারিই ছিল ঝাড়গ্রামের মূল আকর্ষণ। এখন সেই শাল গাছই অস্তিত্ব সঙ্কটে। ডিএফও (ঝাড়গ্রাম) বাসবরাজ হোলেইচ্চি বলেন, “শালগাছ ঝাড়গ্রাম শহরের সৌন্দর্য। যে সব জায়গায় শাল গাছ কমে গিয়েছে সেখানে বনসৃজনের জন্য পুরসভার সঙ্গে প্রাথমিক কথা হয়েছে। শালগাছগুলি বেড়া দিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শহরের বিভিন্ন সংস্থা ও ক্লাবের সাহায্য চাওয়া হবে।”