পুরস্কারের মঞ্চে নেতা-নেত্রীরা। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্য বিধি ভেঙে করোনা কালে ফুটবল ম্যাচ! সেই ম্যাচের উদ্বোধনে শাসকদল তৃণমূলের নেতারা উপস্থিত থাকায় বিতর্ক দেখা দিয়েছে।রবিবার মহিষাদলের রাজবাড়ি সংলগ্ন একটি মাঠে স্থানীয় একটি ক্লাবের উদ্যোগে ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যার উদ্বোধন করেছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলি দাস এবং ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী। প্রতিযোগিতায় আটটি দল অংশ নেয়। আর তাদের খেলা দেখতে রবিবার সকাল থেকেই মাঠে প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটে। যাদের অধিকাংশের মুখেই ছিল না মাস্ক। দর্শকদের মধ্যে ন্যূনতম সামাজিক দূরত্বও ছিল না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে ফুটবল খেলার আয়োজন করেছিলেন সেখানের বিজেপি নেতৃত্ব। যা নিয়ে রীতিমত বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। পূর্ব মেদিনীপুরে যখানে শতাধিক করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে, সংক্রমণের হারও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী, সেখানে সাধারণ মানুষকে সচেতন না করে শাসকদলের নেতারা যেভাবে জমায়েত কে উৎসাহিত করছেন, তাতে প্রশ্ন উঠেছে।
অবশ্য, খেলার মাঠের জমায়েত ঘিরে তেমন চিন্তিত নন তৃণমূল নেতারা। উল্টে তাঁদের যুক্তি, বিরোধীরা যখন মিটিং, মিছিল করছে, তখন তো কেউ প্রশ্ন তুলছেন না। মহিষাদলের ব্লক তৃণমূল সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তো হাজার হাজার লোকের জমায়েত করছে বিজেপি।’’ পাশাপাশি তাঁর ব্যাখ্য, ‘‘সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের খেলাধুলো শুরু হয়ে গিয়েছে। তা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্লাবের ছেলেরা ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সকলকে বারবার বলা হয়েছে।’’ যদিও পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বিজেপির কর্মসূচি হলে করোনা বিধি কার্যকর করার অজুহাত দেখিয়ে বন্ধ করে দেয়। এক্ষেত্রে ফুটবল প্রতিযোগিতা আটকানোর চেষ্টাই করা হয়নি। সবই প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক আচরণ।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, মহিষাদলের ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দলের ব্লক সভাপতি উপস্থিত থাকায় রাজ্য নেতৃত্ব ‘অসন্তুষ্ট’ হয়েছেন। এ ব্যাপারে মহিষাদল বিধানসভা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর তথা জেলা পরিষদের মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আনন্দময় অধিকারীর কাছে তাঁরা জানতে চেয়েছেন বলে জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর। যদিও এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি হননি জেলা তৃণমূলের অন্যতম কো-অর্ডিনেটর আনন্দময় অধিকারী।