তৃণমূলের ছেঁড়া হোর্ডিংয়ের ছবি তুলছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
পুরভোটের প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে। আর তারই সঙ্গে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ি। যার প্রধান প্রথম পতাকা ছেঁড়ার অভিযোগ। রেল শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে দলীয় পতাকা ছিড়ে ফেলার। অভিযোগ যেমন রয়েছে বিজেপি-র তরফে তেমনই তৃণমূলের তরফেও। অভিযোগের তির কংগ্রেসের দিকে।
বুধবার খড়্গপুর শহরের ৭ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে পতাকা ছেঁড়া নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। এ দিন সকালে প্রথমে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীকৃষ্ণপুর মাইতিপাড়ায় বিজেপি ও তৃণমূলের সদ্য লাগানো পতাকা বিক্ষিপ্তভাবে নর্দমার ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এর পর বিজেপি প্রার্থী শ্যামল সাহা ও তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথ মাইতি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও অভিযোগে কোনও রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির নাম নেই। আবার এ দিনই শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী লতা আচার্যর সমর্থনে লাগানো দু’টি হোডিং ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দু’ক্ষেত্রেই তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে টাউন পুলিশ।
লিখিত অভিযোগে নাম না করলেও বিজেপি-তৃণমূল একযোগে আক্রমণ শানাচ্ছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। রেলশহরে কংগ্রেসের দাপট রয়েছে বরাবরই। বিধানসভা কংগ্রেসের দখলে। ২০১০ সালের শেষ পুর-নির্বাচনে জয়ী হয়ে সাড়ে তিনবছর তৃণমূল পুরবোর্ডের দায়িত্বে ছিল। কিন্তু তারপর আস্থা ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফেরে কংগ্রেস।
এ দিন সকালে শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাইতিপাড়া এলাকায় বিজেপি-র বেশ কিছু পতাকা নর্মদায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তৃণমূলের পতাকাও পাওয়া যায় ছেঁড়া অবস্থায়। মঙ্গলবার রাতেই পতাকা লাগানো হয়েছিল বলে দাবি করেছে দুই দলই।
বুধবার এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় দু’দলের কর্মীদের মধ্যেই। বিজেপি প্রার্থী শ্যামল সাহা বলেন, “রাত আড়াইটার পর আমরা পতাকা লাগিয়ে চলে যাই। তারপরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট করে অভিযোগ করতে পারছি না। কিন্তু আমাদের সঙ্গে তৃণমূলেরও পতাকা ছিঁড়ে যাওয়ায় মনে হয় গোটা ঘটনায় কংগ্রেসের হাত থাকতে পারে’’ একই ভাবে তৃণমূলের বিশ্বনাথ মাইতি বলেন, “বিরোধী দল এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে বিজেপি যুক্ত নয় বলে মনে হচ্ছে।’’ কংগ্রেস প্রার্থী কল্যাণী ঘোষ অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “সকালে ঘটনার কথা জেনেছি। আমি জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত তাই এ ধরনের অগণতান্ত্রিক কাজ করার প্রয়োজন নেই। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এই ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চাইছে।’’
অন্যদিকে এ দিনই শহরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী লতা আচার্যও তাঁদের দু’টি হোডিং ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। একটি হোর্ডিংয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লক্ষ্য করে কাদা ছোড়া হয়েছে বলেএ অভিযোগ। যদিও এ দিন দুপুর পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেননি কেউ। লতা আচার্যের কথায়, “বিরোধীরা পরাজয়ের ভয়ে এসব কাজ করছে। আমি পুলিশকে জানিয়েছি।”
তৃণমূলের শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “যাঁরা পরাজয়ের আশঙ্কা করছে তাঁরাই রাতের অন্ধকারে এই কাজ করে গণতন্ত্রের অপমান করছেন। এ সব নিয়ে আমরা ভাবছি না। কারণ পুরবোর্ড আমরাই দখল করব।’’