হলদিয়া টাউনশিপ এলাকায় পপকর্ণ বাজি। —নিজস্ব চিত্র।
রবিবার সকাল থেকেই হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজারে তিলধারনের জায়গা নেই। এখানেই আতশবাজির বড় বাজার বসে ফি বছর। লুকিয়ে চুরিয়ে নয়, বরং প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় শব্দবাজি। কিন্তু এগরার খাদিকুলের বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পর প্রশাসনিক তৎপরতা বেড়েছে বহুগুণ। ফলস্বরূপ, এ বার হলদিয়ার টাউনশিপ মাখনবাবুর বাজারই নয়, দুর্গাচক, মহিষাদলেও শব্দবাজি কার্যত উধাও।
এমন ঘটনা শেষ কবে ঘটেছে মনে করতে পারছেন না হলদিয়ার মানুষ! মাখনবাবুর বাজারে ভিড়ের মধ্যেই রং মশাল-সহ নানা আতশবাজি কিনছিলেন মঞ্জু ভৌমিক। মঞ্জুর কথায়, ‘‘ছেলেদের আবদার ছিল শব্দবাজির জন্য। কিন্তু এ বার এসে দেখলাম দোকানে কোনও শব্দবাজি নেই। শব্দবাজি বন্ধ হয়ে ভালই হয়েছে।’’ বাজি বিক্রেতা অভিজিৎ দাসের কথায়, ‘‘এ বার শব্দবাজি বাজারে নেই। তবে খুব আকর্ষণীয় পপকর্ন বাজি বেরিয়েছে। মাটিতে আছাড় দিলেই ফাটবে। ছোটরা খুব কিনছে।’’ এ ছাড়া আর এক বিক্রেতা দেখালেন, এক ধরনের মটু-পাতলু ম্যাজিক বাজিও বেরিয়েছে। সেটা আবার কী? ম্যাজিক বাজি আসলে থ্রেড বাজি অর্থাৎ ফিতের মতো বাজি। হাতে ধরে টানলে ফাটবে। এ ছাড়া চরকি, তুবড়িও বিক্রি হচ্ছে দেদার।
মাখনবাবুর বাজারে বাজি কিনতে এসেছিলেন সুজয় মাইতি, অসীম মাইতিরা। তাঁরা বলছিলেন, ‘‘শব্দবাজি নেই খুব ভাল কথা। তবে সেই কারণে এ বার আতশবাজির দাম আগুন।’’ বিক্রি কেমন হচ্ছে? দুর্গাচকের এক বাজি বিক্রেতার কথায়, ‘‘সব সময় পুলিশ ঘুর ঘুর করছে। ফলে কোনও ধরনের শব্দবাজি আনা যায়নি। যদিও শব্দ বাজিতেই আমাদের লাভ বেশি থাকে।’’ শব্দবাজি বন্ধ হওয়ায় খুশি পরিবেশ সংগঠনের সদস্যরা। হলদিয়ার পরিবেশকর্মী চৈতালি মজুমদার, নকুল ঘাটি, মণীন্দ্রনাথ গায়েন জানান, শব্দবাজি রুখতে পুলিশের সদর্থক পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞানমঞ্চ, পশুপ্রেমীদের সংগঠনও বিস্তর প্রচার চালিয়েছে।
হলদিয়ায় মহকুমার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল পাণ্ডে বলেন, ‘‘হলদিয়ার মহিষাদলের চিঙ্গুরমারির বেআইনি আতশবাজির কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই কাজের সঙ্গে যুক্তদের পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া হলদিয়া, ভবানীপুর, দুর্গাচকের আতশবাজির ডিলারদের সতর্ক করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে কয়েক টন শব্দবাজি। এর সঙ্গে ডিজের বিরুদ্ধে জ়িরো-টলারেন্স দেখানোর ফলও মিলেছে।’’