বিষের শিশি নিয়ে অবরোধ

তাঁদের বক্তব্য, বাড়তি ফলন ও দুর্যোগের জোড়া ফলায় আলুর যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা ছাড়া রাস্তা নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কেশপুর শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০০:২৬
Share:

প্রতিবাদে সামিল আলু চাষিরা। —নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় আলু ফেলে বিক্ষোভ চলছিলই। ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিষের শিশি হাতে পথে নামলেন ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিরা। তাঁদের বক্তব্য, বাড়তি ফলন ও দুর্যোগের জোড়া ফলায় আলুর যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা ছাড়া রাস্তা নেই।
ক্ষতিপূরণের দাবিতে রবিবার সকালে কেশপুরের নেড়াদেউলের মতিকুলিতে পথ অবরোধ করেন ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিরা। তার জেরে মেদিনীপুর-চন্দ্রকোনা রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। একের পর এক বাস-লরি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অবরোধকারীদের বোঝানোর চেষ্টা হয়। শুরুতে চাষিরা কোনও কথাই শোনেননি। তাঁদের বক্তব্য ছিল, আলুর ভাল ফলন হয়েছিল। তবে যা অবস্থা এতটুকুও ঘরে তোলা যাবে না। সরকারি সাহায্য না পেলে এ বার পথে বসতে হবে। পুলিশ অবরোধ তোলার চেষ্টা করলে রাস্তায় শুয়ে পড়েন চাষিরা। তাঁদের সঙ্গে ছিল বিষের শিশি। পরে প্রশাসনের তরফ থেকে নির্দিষ্ট আশ্বাস দেওয়া হয়। জানানো হয়, প্রয়োজনে ফের এলাকা পরিদর্শন হবে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করা হবে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়। এরপরই অবরোধ তুলে নেন চাষিরা।
অকাল বৃষ্টিতে আলুর ক্ষয়ক্ষতি যে অনেক হয়েছে তা মানছে ব্লক প্রশাসন। কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘দু’-তিনদিন জমিতে জল জমে ছিল। তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে।’’ বিডিও জানান, ইতিমধ্যে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট জেলায় পাঠানো হয়েছে। শীঘ্রই পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পাঠানো হবে। ব্লক প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কেশপুরের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। কেশপুরে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। অকাল বৃষ্টিতে ওই পরিমাণ জমির আলুই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবরোধে ছিলেন মীর বসিরুদ্দিন। ১৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘যা অবস্থা তাতে ১-২ কেজি আলুও ঘরে তুলতে পারব না!’’ ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘অসময়ের বৃষ্টিতে আলু চাষের পরিস্থিতি খারাপ।’’
অকাল বৃষ্টিতে কেশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু চাষের জমি জলের তলায় চলে গিয়েছিল। এখনও কিছু জমিতে জল জমে রয়েছে। ব্লক প্রশাসনের দাবি, বারবার এলাকা পরিদর্শন হচ্ছে। টাকার অঙ্কে ক্ষতির পরিমাণ কত তা রিপোর্ট তৈরির পরে জানানো যাবে। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, ‘‘কেশপুরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। চাষিদের সঙ্গে কথা বলেছি। ওখানে ক্ষয়ক্ষতি বেশিই হয়েছে। রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের সব রকম ভাবে সাহায্য- সহযোগিতা করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement