বছর ষোলোর এক কিশোরীর মৃতদেহ নিতে চাইলেন না মৃতার আত্মীয়রা। মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালের ঘটনা।
জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই কিশোরীর সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। পরিবার সেই সম্পর্ক মেনে না নেওয়াতেই বিষ খেয়ে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করে। কিন্তু কেন ওই কিশোরীর দেহ পরিবারের তরফে নেওয়া হল না? মৃতার পরিবারের দাবি, আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় ওই দেহ সৎকার তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। এমনকী তাঁরা ‘সমব্যথী’ প্রকল্পে অর্থ সাহায্যও নিতে চাননি। অবশ্য স্থানীয়দের অভিযোগ, মেয়েটির সম্পর্ক নিয়ে বাড়িতে সমস্যা চলছিল। ফলে মেয়েটি মারা যাওয়ার তার দায়িত্ব নিতে নারাজ পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না দাস (১৬) নামে ওই কিশোরী খেজুরির জরারনগরের বাসিন্দা। মা-বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে থাকত দিদি-জামাইবাবুর কাছে। সোমবার বিকেলে ময়না বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে বলে অভিযোগ। গুরুতর অবস্থায় তাকে সন্ধ্যায় তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে ময়নার দেহ বাড়ি নিয়ে যেতে অস্বীকার করেন আত্মীয়রা। মৃতার জেঠতুতো দাদা ভোলানাথ দাসের কথায়, ‘‘দেহ নিয়ে যেতে অনেক খরচ। তারপর আবার সৎকারের খরচ। এত টাকা তো আমাদের নেই।’’
ঘটনার কথা জানতে পেরে খেজুরি-১ এর বিডিও সৌম্য দত্ত কিশোরীর আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিডিও তাদের জানান, ‘সমব্যথী’ প্রকল্পে দু’হাজার টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু তারপরও হাসপাতালে মৃতদেহ ফেলে চলে আসেন কিশোরীর আত্মীয়রা। অর্থসাহায্যের প্রতিশ্রুতির পরও কেন মৃতদেহ নিতে যেতে চাইছেন না পরিজনরা? কোনও সদুত্তর মেলেনি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ওই কিশোরীর সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক পরিবারের তরফে না মেনে নেওয়াতেই ওই কিশোরী বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে। পরিবারের মেয়ের এমন প্রেমের বিতর্ক এড়াতে পরিজনদের এমন সিদ্ধান্ত। তাহলে ওই দেহ সৎকার করা হবে কী করে? হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও বেওয়ারিশ দেহ যেভাবে রাখা হয়, এ ক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থাই করা হবে।