অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সহদেব ধাড়ার বাড়িতে পুলিশকর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন করোনা আক্রান্তের পরিবারের সদস্যরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায়। তার জেরে আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নেয় যে নামাতে হয় পুলিশও। ঘটনাচক্রে ওই কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের।
সম্প্রতি করোনা ধরা পড়ে চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের পাইকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সহদেব ধাড়ার পরিবারের দুই সদস্যের। তাঁদের চিকিৎসা চলছে বাড়িতেই। ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। পেশায় গ্রামীণ চিকিৎসক সহদেবের অভিযোগ ওই দিন সন্ধ্যায় তিনি বাড়ির বাইরে বেরোতেই তাঁকে বাধা দেন বিশ্বনাথ পালুই নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা। সহদেবের কথায়, ‘‘রোজ যেমন বাইরে যাই তেমনই গিয়েছিলাম। কখনও কেউ বারণ করেনি। কিন্তু আমাকে হঠাৎ গালিগালাজ করে রাস্তা আটকায় বিশ্বনাথ। আমাকে বাঁশ নিয়ে মারধর করে। আজ সকালে বাড়ি ভাঙচুর করে।’’ সহদেবের আরও অভিযোগ, মঙ্গলবার সকালে তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি, জল, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং কেবল টিভি-র সংযোগও কেটে দেওয়া হয়। মোট ৩ জন ওই হামলার জেরে জখম হন।
বিশ্বনাথ অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘সহদেবের বাড়িতে করোনা রোগী আছে। কিন্তু তা-ও ওঁরা বাইরে বেরোচ্ছিলেন। এই ঘটনার প্রতিবাদ করে সহদেবকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। তার পর ওঁরাই লোকজন নিয়ে এসে আমার পরিবারের উপর চড়াও হন।’’
চন্দ্রকোনা ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সূর্যকান্ত দোলই বলেন, ‘‘ওঁরা মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গ্রামে আসেন। গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন। গ্রামের মানুষ মিটিং করে তাঁকে বেরোতে নিষেধ করেছিলেন। তাঁকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা না মেনেই ওঁরা বাড়ি থেকে বেরোন। গ্রামবাসীরা তার প্রতিবাদ করে। তার পাল্টা হিসাবে সহদেবই অতর্কিতে আক্রমণ করেন।’’ সহদেবের বাড়ির জল, বিদ্যুৎ এবং কেবল সংযোগ কেটে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে যোগ থাকার অবিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি সুজয় পাত্র বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা বাইরে বেরোনো নিয়ে পাড়ায় একটা গন্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। ওখানে রাজনৈতিক কোনও সমস্যা হয়নি। পুলিশ প্রশাসন বিষয়টা দেখছে। গন্ডগোলের সঙ্গে দলের কেউ জড়িত নয়।’’ ওই কাণ্ডের পর, উভয় পক্ষই চন্দ্রকোনা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।