তোলাবাজি, মারপিটের মতো ঘটনায় নাম জড়ালে রেয়াত করবে না দল। ফের এই বার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার কালীঘাটে দলের নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠক ডেকেছিলেন মমতা। সেখানেই ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলায় দলের দুই ব্লক সভাপতি— নয়াগ্রামের উজ্জ্বল দত্ত ও সাঁকরাইলের সোমনাথ মহাপাত্রকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে দলের স্থানীয় লোকজনকে ঠিকাকর্মী পদে নিয়োগের দাবিতে ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিস কর্পোরেশনের কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছিল উজ্জ্বলবাবু ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আর সোমনাথের নেতৃত্বে রগড়া অঞ্চলের নেপুড়া গ্রামে অবৈধ বালি খাদান চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। কয়েকদিন আগে সেই খাদানকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল সংঘর্ষও হয়। দল সূত্রে খবর, দু’টি ঘটনা জেনেই ক্ষুব্ধ হন মমতা। আর তারপর এই পদক্ষেপ।
তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি চূড়ামণি মাহাতো বলেন, “নেত্রীর নির্দেশে দুই ব্লক সভাপতিকে সরানো হচ্ছে। ওই দু’টি ব্লকে কারা নতুন সভাপতি হবেন, সেই সিদ্ধান্ত দু’একদিনের মধ্যেই নেওয়া হবে।” চূড়ামণিবাবু জানান, এ দিন নেত্রী ফের জানিয়ে দিয়েছেন, স্বচ্ছভাবে দলের কাজ করতে হবে। তোলাবাজি, মারপিট বরদাস্ত করা হবে না। পদ হারিয়ে উজ্জ্বলের প্রতিক্রিয়া, “নেত্রী যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, সেই ভাবেই চলব।” যদিও সোমনাথ বলেন, “দলের তরফে কোনও খবর পাইনি।” তৃণমূল সূত্রের খবর, নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু। সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি হতে পারেন তপন পট্টনায়ক।
দলীয় সূত্রে আরও খবর, আগামী লোকসভা ভোটের আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই তারকা সাংসদ দেব এবং সন্ধ্যা রায়ের রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়ানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। কর্মসূচি স্থির করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতিকে। তা ছাড়া, ভোটার তালিকায় যাতে একজন সমর্থকেরও নাম না বাদ পড়ে, সে জন্য নজরদারির দায়িত্ব বর্তাচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্যদের উপর। মমতার নির্দেশ পেয়ে তড়িঘড়ি দলের সব পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। জেলা সভাপতি অজিতবাবু বলেন, “আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠক হবে। কী ভাবে কাজ করতে হবে, তা সকলকে বুঝিয়েও দেওয়া হবে। নির্বাচনের সময় যেন দেখা না যায় যে উপযুক্তদের নাম তালিকায় নেই।’’
শারোদোৎসবের মুহূর্তকে জনসংযোগে ব্যবহারের সিদ্ধান্তও হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, নেতা-কর্মীরা পুজো মণ্ডপে গিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে গল্প করবেন, দর্শনার্থীদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করবেন।