বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি।
বিস্ফোরণ হল এক সক্রিয় তৃণমূলের কর্মীর বাড়িতে। জখম হলেন একজন। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিনই এই কাণ্ড ঘটল বেলদা থানার গাংগুটিয়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নারায়ণগড় ব্লকের হেমচন্দ্র গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংগুড়িয়ার বাসিন্দা দেবব্রত খাঁকারির বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ বিস্ফোরণ হয়। বাজি নাকি বোমা, কী ফেটেছে তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল। তাতেই বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় বাড়ির ইটের দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে, উড়ে গিয়েছে অ্যাসবেসটসের ছাউনির একাংশ, পাশের বাড়ির জানলার কাচও ভেঙেছে। খবর পেয়ে বেলদা থানার পুলিশ এলাকায় আসে। ঘটনায় আহত হয়েছেন গ্রাম কমিটির সম্পাদক ধীরেন জানা। তাঁকে বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দেবব্রত তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তিনি দলের নেতা সূর্যকান্ত অট্টের অনুগামী বলেই পরিচিত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহু দিন ধরেই দেবব্রতের বাড়িতে বাজি ও বোমা তৈরি করা হয়। প্রয়োজনমতো তা সরবরাহ করেন দেবব্রত। দেবব্রতর বাবা ভগবান খাঁকারি বিজেপি-র বুথ সভাপতি বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। যদিও বিজেপি তা মানতে নারাজ।
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার দিনই এই ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসকদল। স্থানীয় বাসিন্দা যুগল মাইতি বলেন, ‘‘সঠিক তদন্ত করা হোক। এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।’’ দেবব্রতর মাকে আটক করেছে পুলিশ।
গত বছর ২৩ অগস্ট মকরামপুরে তৃণমূল কার্যালয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল তিনজন তৃণমূল কর্মীর। এ দিনের ঘটনায় সেই স্মৃতি উস্কে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, মকরামপুরের বিস্ফোরণেও জড়িত ছিলেন দেবব্রত। বিস্ফোরণস্থলে এসেছিলেন বেলদার এসডিপিও সুমনকান্তি ঘোষ।
ঘটনার পরে নারায়ণগড়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ প্রকাশ্যে এসেছে। দলের ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, ‘‘যাঁর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে, তিনি একজন নেতার অনুগামী। কেন কী উদ্দেশ্যে বিস্ফোরক মজুত করে রাখা ছিল, পুলিশ তদন্ত করুক।" অন্য দিকে, সূর্যকান্ত অট্টের বক্তব্য, ‘‘ব্লকে সবাই আমার অনুগামী। বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে নাকি বাইরে থেকে মারা হয়েছে, পুলিশ দেখুক।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশ বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বোমা-বন্দুক থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। ভোটে সন্ত্রাস করতেই এসব মজুত করা হয়েছিল বলে মনে হয়।’’