প্রতীকী ছবি
দশ বছর আগে অবসর নিয়েছেন শারীরশিক্ষা বিষয়ের শিক্ষকতা থেকে। ভেবেছিলেন পেনশনের টাকায় অবসর জীবন কাটাবেন। কিন্তু ১০ বছর কেটে গেলেও সেই পেনশন এখনও চালুই হয়নি কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক অসিত কুমার মাজির।
দশ বছর ধরে অনেক দৌড়াদৌড়ি করেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় মাস তিনেক আগে ‘দিদিকে বলো’ তে ফোন করেছিলেন অসিত। তাতেও মেলেনি সুরাহা। ফলে এখন নিজের দশ কাঠা জমিতে দিনরাত খেটে দিন গুজরান করতে হচ্ছে সত্তর বছরের বৃদ্ধকে। সংসার চালাতে এই বয়সেও তিনটি স্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসেবে পড়াচ্ছেন তিনি।
১৯৭৫ সালে উত্তর জিয়াদা হাইস্কুলে শারীরশিক্ষার শিক্ষকতা শুরু করেন কোলাঘাটের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা অসিত। ১৯৭৬ সালে থির অনলবেড়িয়া হাইস্কুলে যোগ দেন। তার পর আরও কয়েকটি স্কুলে শিক্ষকতার পর ১৯৮০ সালে যোগ দেন কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলে। তখন তিনি বিপিএড ডিগ্রিধারী। পেতেন গ্র্যাজুয়েটের বেতনক্রম। ১৯৯৬ সালে চাকুরিরত অবস্থায় এমপিএড পাঠক্রম সম্পূর্ণ করেন। অসিতের অভিযোগ, উচ্চ ডিগ্রি লাভ করলেও তাঁকে দেওয়া হত গ্র্যাজুয়েট বেতনক্রমই। বহু আবেদনেও যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন না মেলায় ২০০৫ সালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। ২০০৬ সালে হাইকোর্ট রায় দেয় চার সপ্তাহের মধ্যে নতুন যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন দিতে হবে অসিতবাবুকে। অসিতবাবুর অভিযোগ, হাইকোর্টের সেই নির্দেশ মানেননি তৎকালীন পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই। ২০০৭ সালে আদালত অবমাননার মামলা করেন তিনি। ২০০৯ সালে ফের কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, অসিতবাবু তাঁর নতুন যোগ্যতা অনুযায়ী বেতন পাওয়ার যোগ্য। ২০১০-এর ৩১ মার্চ চাকুরি থেকে অবসর নেন অসিত। তাঁর অভিযোগ, নতুন স্কেল তো দূরের কথা অবসরের দশ বছর পরেও চালু হয়নি তাঁর পেনশন।
মাস তিনেক আগে ‘দিদিকে বলো’ তে ফোন করেন অসিত। তাঁর দাবি, ‘‘অভিযোগ জানানোর পরেও সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি।’’
কেন চালু হয়নি কোলা ইউনিয়ন হাইস্কুলের এই প্রাক্তন শিক্ষকের পেনশন?
পূর্ব মেদিনীপুরের ডিআই আমিনুল আহাসান এই বিষয়ে বলেন, ‘‘২০১৮ সালে আমি এই জেলায় কাজে যোগ দেওয়ার পর ওঁর বিষয়টি নজরে আসে। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ওঁর নথিপত্র রাজ্যে পাঠাই। অনলবেড়িয়া স্কুলে শিক্ষকতার কোনও নথি উনি জমা দিতে না পারায় ওঁর পেনশন চালু হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি ওই স্কুলের প্ৰধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই সময়ের নথি জোগাড় করতে।’’