অলঙ্করণ: নির্মাল্য প্রামাণিক।
স্কুলে ক্লাস শুরুর অনেক আগেই মোটরবাইক বা সাইকেলে চেপে এসে ওরা হাজির স্কুলের সামনে। হাতে দামি মোবাইল। সামনে দিয়ে কোনও মেয়েকে যেতে দেখলেই শুরু হয় কটূক্তি। ভয়ে সিঁটিয়ে যায় পড়ুয়ারা।
প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের পথে এমনটাই দস্তুর হয়ে ওঠায় পুলিশের কাছে নালিশ গিয়েছিল ওইসব রোমিওদের উপদ্রব নিয়ে। সোমবার তমলুক শহরের রত্নালী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে আচমকা পুলিশি অভিযানে হাতেনাতে পাকড়াও হল ১২ জন রোমিও। বাজেয়াপ্ত দু’টি মোটরবাইক।
পুলিশ জানিয়েছে, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে কয়েকজন ছেলে এসে অপেক্ষা করত। তাদের কাজই স্কুলে যাওয়া ছাত্রীদের উদ্দেশে কটূক্তি করা। অভিযোগ ছিল পুলিশের কাছে। তিতিবিরক্ত অভিভাবকরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর ঘটনাস্থলে হাজির পুলিশ। অভিযানের নেতৃত্বে থাকা তমলুক থানার ওসি কৃষ্ণেন্দু প্রধান জানান, স্কুলের সামনে ছাত্রীদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগে ধৃত ১২ জনের মধ্যে ৬ জনের বয়স ১৮ বছরের বেশি। এদের মধ্যে দু’জন স্কুল ছাত্রও রয়েছে। তিনি আরও জানান, নিয়ম মেনে প্রাপ্তয়স্কদের জরিমানা করা ছাড়াও মামলাও দায়ের করা হয়েছে। আর ১৮ বছরের কম যারা তাদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এটা তো শুরু। পুলিশের আসল লক্ষ্য সামনের উৎসবের মরসুম। পুজোর সময় মণ্ডপ বা রাস্তায় রোমিওদের উপদ্রব ঠেকাতে কোমর বেঁধে অভিযানে নামছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মণ্ডপে ঠাকুর দেখাতে যাওয়া কটূক্তি করা, পকেটমারি-সহ বিভিন্ন অপরাধ রুখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মণ্ডপ ও সংলগ্ন এলাকায় রোমিওদের ধরতে সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারির সাথে বাইকে মহিলা পুলিশের টহলদারির ব্যবস্থা রয়েছে। প্রয়োজন হলেই পুলিশের কাছে সাহায্যের জন্য পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রও খোলা হচ্ছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে। সড়ক দুর্ঘটনা ঠেকাতে এ বার হেলমেটহীন মোটরবাইক চালক এবং মদ্যপ চালকদের ধরতে জেলার প্রতিটি থানায় অভিযান চালানো শুরু হয়েছে। ট্রেকার, বাসের ছাদে যাত্রী তোলা, টোটো, অটোতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার বিরুদ্ধেও অভিযান চালানো শুরু হয়েছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘পুজোর সময় মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ-সহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটে। অপরাধীদের ধরতে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ-সহ বিশেষ নজরদারি দল থাকছে। রাস্তায় ও মণ্ডপের কাছে পুলিশের টহলদারি চলবে। কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অভিযোগ জানানো যাবে।’’