নিজস্ব চিত্র।
ভোটের আগে বাইক বাহিনী নামিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রতি বারই ওঠে। ছবিটা বদলাতে প্রার্থীর প্রচারের সময় গাড়ি ব্যবহারের উপর বিশেষ নজর রাখবে নির্বাচন কমিশন। রবিবার মেদিনীপুরে এসে সেটা বুঝিয়ে দিলেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার দিব্যেন্দু সরকার। তিনি জানিয়েছেন, যতগুলো গাড়ি ব্যবহার হবে, ততগুলোর গাড়ির খরচই প্রার্থীর খরচের মধ্যে আনা হবে। প্রার্থীরা এই খরচ হিসেবের মধ্যে আনছেন কি না তা দেখা হবে। এর ফলে বাইক বাহিনীর দাপট কমবে বলে কমিশনের মত।
দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “প্রার্থীরা প্রচারে কতগুলো গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন, এ নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশ নেই। তবে যে গাড়ি ব্যবহার করবেন তার অনুমতি নিতে হবে। যতগুলো গাড়ি ব্যবহার হবে তার খরচ হিসেবের মধ্যে আনতে হবে।’’ বাইক বাহিনীর দাপট এড়াতে বিশেষ কোনও ব্যবস্থা? রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের জবাব, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মনোনয়নের সময় তিনটির বেশি গাড়ি ঢুকতে পারবে না।’’
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুর, জঙ্গলমহলের এই তিন জেলার রিটার্নিং অফিসারদের (আর ও) এক প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিতে মেদিনীপুরে আসেন দিব্যেন্দুবাবু। সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের ডেপুটি মুখ্য নির্বাচনী অফিসার অনামিকা মজুমদার। মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে সকাল এগারোটা থেকে বেলা দু’টো এই প্রশিক্ষণ শিবির হয়। ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা জেলার মুখ্য নির্বাচনী অফিসার জগদীশপ্রসাদ মিনা।
পশ্চিমবঙ্গে এ বার ভোট হবে ছয় দফা, সাত দিনে। প্রথম দফায় ৪ এবং ১১ এপ্রিল ভোট রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “এর আগেও দু’দফায় শিবির হয়েছে। ফের শিবির হল। মনোনয়ন প্রক্রিয়ার সমস্ত ব্যাপারগুলো খুব স্পষ্ট ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা সম্পূর্ণ ভাবে এই তিনটি জেলায় তৈরি।” মাওবাদী প্রভাবিত এলাকার পরিস্থিতি ভাল বলে জানিয়ে দেন রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী অফিসার। তবে এই এলাকায় যে বাড়তি বাহিনী মোতায়েন থাকবে, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “জঙ্গলমহলে আমরা ভোট করার পক্ষে একদম খুব ভাল জায়গায় আছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এই এলাকায় বাহিনী মোতায়েন তুলনামূলক ভাবে বেশি হয়। এ বারও সেটা হবে। তবে কোথায় কত বাহিনী থাকবে সেটা এখন বলা সম্ভব নয়।”
মাওবাদী প্রভাবিত জঙ্গলমহলে কি ভোটের সময়সীমার কোনও পরিবর্তন হবে? দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “এখনও পর্যন্ত সময় নিয়ে বিজ্ঞপ্তি বেরোয়নি।” জেলার কিছু এলাকা ‘শ্যাডো জোন’। সেখানে যোগাযোগের কোনও সমস্যা হবে না? দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “নতুন কিছু মোবাইল টাওয়ার বসেছে। প্রয়োজনে স্যাটেলাইন ফোন ব্যবহার হবে। পুলিশের আরটি মোবাইলে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর, বন দফতরের কমিউনিকেশন চ্যানেল সবই ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালই থাকবে।”