প্রতীকী ছবি।
রাজনৈতিক অশান্তির জেরে রবিবার রাত থেকে নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে ভগবানপুর-২ ব্লকের বরোজ এলাকার চিড়াকুঠি গ্রামে। রাতভর গ্রামে বোমাবাজি চলে। সোমবার সকালে অসিত মাইতি নামে এক দলীয় কর্মীকে বিজেপির লোকজন মারধর করেছে বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। ভূপতিনগর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছে আক্রান্ত ওই কর্মীর পরিবার। যদিও ঘটনা অস্বীকার করেছে বিজেপি।
উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে বরোজ জঞ্চলের ঘোলবাগদা বুথে জেলা সভাধিপতি উত্তম বারিকের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন বিজেপির মহিলা মোর্চার সম্পাদিকা সরস্বতী জানা এবং তাঁর ছেলে অমর জানাকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। পুলিশের উপস্থিতিত হামলা হলেও তারা নীরব ছিল বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। এরপর রাতে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতির নেতৃত্বে প্রতিবাদ মিছিল করেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁরা ভুপতিনগর নগর থানা ঘেরাও করেন। গভীর রাত পর্যন্ত থানা ঘেরাও চলে। শেষ পর্যন্ত বিজেপির তরফে স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য তথা তৃণমূল নেতা মানব পড়ুয়া সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভূপতিনগর থানায় শ্লীলতাহানি ও খুনের চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তৃণমূলের দাবি, রাতভর ঘোলবাগদার পাশের গ্রাম চিড়াকুঠিতে বিজেপি কর্মীরা বোমাবাজি করে।
সোমবার সকাল থেকে বরোজ অঞ্চলের ঘোল বাগদা, চিড়াকুঠি সহ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে টহলদারি শুরু করেছে পুলিশ। কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত চলছে। পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণ। এলাকায় পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। তবে বোমাবাজির ঘটনা জানা নেই।’’
বোমাবাজির কথা অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবিরও। বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘গত বিধানসভা ভোটের আগে জনরোষের হাত থেকে বাঁচতে যারা শুভেন্দু অধিকারীর শরণাপন্ন হয়েছিল, তারাই এখন তৃণমূলে ফিরে গিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে। এলাকার মানুষ তাদের পাশে নেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘অভিযুক্তদের আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি গ্রেফতার না করা হয় তবে আগামী দিনে এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি চলবে বলে এসডিপিওকে আমরা জানিয়েছি।’’
বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদ সদস্য তথা তৃণমূল নেতা মানব পড়ুয়া বলেন, ‘‘নতুন করে চিড়াকুঠি গ্রামে ওরা অশান্তি করেছে। তৃণমূল করার অপরাধে অসিত মাইতি নামে এক কর্মীকে মারধর করেছে। সারারাত ধরে সেখানে বিজেপির লোকজন বোমাবাজি করেছে। আমরাও থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’
রাজনৈতিক মহলের মতে, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। কে কতটা এলাকায় নিজের প্রভাব রাখতে পারে তারই লড়াই চলছে।