Kharagpur

নানা জট, জনপ্রিয় হচ্ছে না ট্রেনের টিকিট কাটার অ্যাপ

খড়্গপুর রেল ডিভিশনে ইউটিএস মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের সংখ্যা বৃদ্ধিতে জোর দিতে মরিয়ে রেলের কর্মাশিয়াল বিভাগ।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ০৮:৪০
Share:
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিয়ম বদলেছে। সরল করা হয়েছে অ্যাপ। উদ্দেশ্য কাউন্টারে অসংরক্ষিত টিকিট কাটার ভিড় কমানো। গত কয়েক বছর ধরেই সেই চেষ্টা চলেছে। তবে করোনার আনলক পর্বে একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছিল অ্যাপ। প্রচার চালিয়ে ফের বাড়ানো হয়েছে তার ব্যবহার। যদিও এখনও অসংরক্ষিত টিকিট কাটার মাধ্যমে সব ব্যবস্থার মধ্যে পিছিয়েই ‘আনরিজার্ভড টিকিটিং সিস্টেম’ বা ‘ইউটিএস’ অ্যাপ।

Advertisement

খড়্গপুর রেল ডিভিশনে ইউটিএস মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারের সংখ্যা বৃদ্ধিতে জোর দিতে মরিয়ে রেলের কর্মাশিয়াল বিভাগ। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই ডিভিশনের ৩৩টি স্টেশনে একযোগে চালু হয়েছিল এই অ্যাপ। জিপিএস সেন্সিং নির্ভর এই অ্যাপ ব্যবহারে প্রথম পর্যায়ে নানা জটিলতা দেখা দিলেও সময়ের সঙ্গে অ্যাপে নানা আপডেট এনে সরল করা হয়েছে। এখন বেড়েছে অ্যাপ ব্যবহারের দূরত্ব। আগে নিকটবর্তী স্টেশন থেকেদুই কিলোমিটার পর্যন্ত ওই অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ থাকলেও এখন তা বেড়ে হয়েছে পাঁচ কিলোমিটার। বেশিরভাগ মানুষ যাতে বাড়িতে বসেই অসংরক্ষিত টিকিট কাটতে পারেন সেই লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছে রেল। তবে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে রেললাইন থেকে ২০ মিটারের দূরত্ব এখনও কমানো হয়নি। এর জেরে স্টেশনে পৌঁছেও বহু যাত্রী কাউন্টারের লম্বা লাইন দেখে অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছেন না। সে ক্ষেত্রে যাত্রীরা ঝুঁকছে অসংরক্ষিত টিকিটের জন্য স্টেশনগুলিতে বসানো অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (এটিভিএম)-এর দিকে। যদিও বহু ছোট স্টেশনে এটিভিএম না মেলায় যাত্রীরা কাউন্টার টিকিটেই নির্ভরশীল।

রেল প্রচার চালালেও জনপ্রিয় হতে পারছে না ইউটিএস অ্যাপ। বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলোক কৃষ্ণ বলেন, “গত অর্থবর্ষের তুলনায় ইউটিএস অ্যাপ ব্যবহার অনেক বেড়েছে। জালিয়াতি ঠেকাতেই রেললাইন থেকে ২০ মিটারের দূরত্ব রাখা জরুরি। যাতে কোনও বিনা টিকিটের যাত্রী ট্রেনে সফরকালে অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট বানাতে না পারেন, তাই এই নিয়ম। আগামীতে এই দূরত্ব কী ভাবে আরও কমানো যায় সেটা নিশ্চয়ই রেলবোর্ড দেখবে।”

Advertisement

খড়্গপুর ডিভিশনের সাব-আরবান শাখায় বহু স্টেশন গ্রামীণ এলাকায় অবস্থিত। সেখানকার যুব সমাজের অনেকেই এই অ্যাপ ব্যবহার করলেও বয়স্ক যাত্রীরা এতে সচ্ছন্দ্য নন। আবার যাঁরা অ্যাপ ব্যবহার করছেন, তাঁরা রিটার্ন টিকিট, জিপিএস সেন্সিং নিয়ে নানা সমস্যায় পড়ছেন। আগে কিউআর কোড স্ক্যান করে স্টেশন বাছাইয়ের সুযোগ থাকলেও এখন কিউআর কোড দেখা যাচ্ছে না বলে দাবি। ফলে, ২০ মিটারের দূরত্বের মারপ্যাঁচে পড়ছেন যাত্রীরা। দ্রুত টিকিট কেটে ট্রেনে উঠতে এটিভিএম যন্ত্রে আস্থা রাখছেন বেশিরভাগ যাত্রী। কিউআর স্ক্যানে অনেক অনিয়ম দেখা যাওয়ায় তা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন খড়্গপুরের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার।

ইউটিএস অ্যাপ ব্যবহারকারী খড়গপুরের ইন্দার বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সায়ক চক্রবর্তীর অভিজ্ঞতা, “নানা সময়ে সার্ভারের গোলযোগ দেখা যায়। অ্যাপের ভরসায় থেকে ব্যর্থ হয়ে স্টেশনে এসে দীর্ঘ লাইনে ট্রেন হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়। অ্যাপের ডেভেলপমেন্টে রেলের আরও কাজ করা জরুরি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement